এ ঘটনায় এক ব্যক্তি মামলা করেছেন। একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
Published : 28 Mar 2024, 05:10 PM
শরীয়তপুরের জাজিরায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের সময় হাতবোমার বিস্ফোরণে দুপক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার রাতে উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে বলে শরীয়তপুর পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব জানান।
এ ঘটনায় আহতের মধ্যে গুরুতর সজিব মুন্সী (২৫) ওই ইউনিয়নের মিয়া চাঁন মুন্সীকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ আলী মুন্সীর ছেলে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
উভয় পক্ষের অন্য নয় আহতের মধ্যে আছেন- জাকির হোসেন (৩৫), মিলন মিয়া (৪৫), আক্কাস শেখ (৫০), জয়নাল মাল (২৩), রনি পেদা (৩৫), শহীদ খা (২৬)। তাদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার বিলাশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত মিয়া চান মুন্সীকান্দির গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে তার চাচাতো ভাই অপু ও অনিকের জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এর জেরে বুধবার রাতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে।
জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শুরু হলেও এলাকার আধিপত্য নিয়ে পূর্ববিরোধ থাকায় ইউপি চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাদবরের লোকজন সংঘর্ষে জড়ান।
স্থানীয়রা আরও জানান, দুই পক্ষের লোকেরা শত শত হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। বোমার আঘাতে সজিব মুন্সী নামে একজন গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আঘাত মারাত্মক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিলাশপুর এলাকার মতিন বেপারী বলেন, বোমা বিস্ফোরণের শব্দে এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা ভীত হয়ে পড়ে।
পরাজিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী জলিল মাদবরের দাবি, “গত মঙ্গলবার জমি নিয়ে দুই চাচাতো ভাইয়ের দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যার পরে কুদ্দুস বেপারীর লোকজন বাড়িঘর লুটপাট করে।
এ সময় একজনের হাতও ভেঙে দেওয়া হয়। বুধবার রাতে কুদ্দুস বেপারী নিজে তার লোকজন নিয়ে এসে হাতবোমা মারে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “বোমার আঘাতে আমার সমর্থক সজিব নামের একজনের নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। আমি ঢাকায় আছি।”
এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারীর ভাষ্য, “মহর খার কান্দি নামে একটি গ্রাম আছে। ওখানে বসে আমার ৫-৬ জন লোক চা খাচ্ছিল। তখন জলিল মাদবরের পক্ষের একদল লোক বোমা নিয়ে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে আমার লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।”
কুদ্দুস বেপারী আরও বলেন, “যতটুকু জানতে পেরেছি, ধাওয়া দিতে গিয়ে জলিল মাদবর গ্রুপের ওই লোকটা বোমা নিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। পরে নিজের কাছে থাকা বোমা বিস্ফোরিত হয়ে সে আহত হয়। আমার সমর্থক গিয়াস উদ্দিনের বাড়িসহ ১০টি বাড়িতে হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লুট করা হয়েছে। আহত গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছেন।”
জলিল মাদবরের পক্ষের রতন মাদবর নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ২৭ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন বলে জানায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালিয়ে সামচুল হক নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় জাজিরা থানা পুলিশ।
শরীয়তপুর পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব বলেন, “বিলাশপুরে হাতবোমা বিস্ফোরণে আহতের ঘটনার সত্যতা রয়েছে। ওই এলাকায় প্রতিদিনই পুলিশের দুই/তিনটি টিম মোতায়ন থাকে। পুলিশ যদি মোতায়ন করা না থাকত, তাহলে হয়ত আরও সংঘর্ষ ঘটত।”
তিনি বলেন, “আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।”