মাদারীপু‌রে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ‘ধর্ষণ’, সাবেক চেয়ারম‌্যা‌নের বিরুদ্ধে মামলা

সাবেক চেয়ারম্যান বলছেন, তিনি ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের’ শিকার।

মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2022, 08:01 AM
Updated : 30 Sept 2022, 08:01 AM

মাদারীপুর সদর উপজেলায় ১৪ বছর বয়সী এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই কিশোরীর মা।

শুক্রবার সকালে ছিলারচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল সরদারকে আসামি করে ধর্ষণের মামলাটি করা হয়েছে বলে জানান মাদারীপুর সদর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, ওই কিশোরী তার পরিবারের সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল সরদারের বাসায় ভাড়া থাকতো। তার মা একটি স্কুলে অফিস সহায়কের কাজ করেন, বাবা দিনমজুর। মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বাসায় রেখে ওই দম্পতিকে কাজে যেতে হয়।

বৃহস্পতিবার বিকালে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল সরদার ওই কিশোরীর ঘরে যান এবং তাকে ধর্ষণ করেন। সন্ধ্যায় কিশোরীর মা-বাবা বাড়িতে আসলে বিষয়টি বুঝতে পেরে রাতে সাড়ে ১০টায় তাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন বাবুল সরদার।

মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শিহাব চৌধুরী বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে একজন প্রতিবন্ধী কিশোরী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া শেষে গাইনি চিকিৎসক তার আলামত সংগ্রহ করেন।”

ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বাবা বলেন, “কয়েকমাস আগে চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাড়া উঠছি। চেয়ারম্যানকে আমরা অভিভাবক মনে করতাম। মেয়েটা চেয়ারম্যানকে দেখলে ‘দাদা দাদা’ করতো। কিন্তু সে সুযোগ পেয়ে আমার মেয়েটার ক্ষতি করে দিলো।

“আমি গ্রামে কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না। সবাই উল্টো ভয় দেখাচ্ছে। চেয়ারম্যান সাবেক হলেও গ্রামে প্রভাবশালী সালিশদার। তার ভয়ে কেউ আমার পাশে নেই। সবাই ভয় পাচ্ছে। এ অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসছি। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।”

তবে ঘটনা অস্বীকার করে বাবুল সরদার মুঠোফোনে বলেন, “ওই কিশোরীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আমার বাড়িতে ভাড়া থাকে। তার বাবা আমার কাছে বিদেশ যাওয়ার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা ধার চেয়েছিল কিছুদিন আগে। আমি ওই টাকা না দেওয়ায় স্থানীয়ভাবে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

“এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।”

এলাকায় না থাকার কারণ জানতে চাইলে বাবুল সরদার বলেন, “আমার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য দূরে আছি। সময়মত সবার সামনে আসবো।”

নারী ও কিশোরীদের নিয়ে কাজ করা বসুন্ধরা সেবা সংস্থার সভাপতি লাইজু আক্তার হাসপাতালে বলেন, “এমন ঘটনা মেনে নেওয়া কঠিন। প্রতিবন্ধী মেয়েটার সঙ্গে জঘন্যতম কাজ করা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”

মাদারীপুর সদর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় বলেন, “রাতেই ধর্ষণের অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। শুক্রবার সকালে মামলা রেকর্ড হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

“এ বিষয় তদন্ত চলছে। আসামি সাবেক চেয়ারম্যান বাবুল সরদার এলাকায় নেই। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে”, যোগ  করেন ওসি।