ঘরে ভেতরে ঢুকে মায়ের গলায় কাপড় প্যাঁচানো মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে ছোট ছেলে।
Published : 14 Dec 2023, 01:46 PM
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায় ঘর থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জেরে ওই নারীকে হত্যার পর লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার রাতে উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের উত্তর বারাহিগুণি গ্রামের ছেরাজ মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন দাগনভূঞা থানার ওসি আবুল হাসিম।
নিহত পারুল আক্তার (৪৮) উত্তর বারাহিগুণি গ্রামের ছেরাজ মিয়ার বাড়ির সৌদি আরব প্রবাসী আতাউর রহমান আত্তপ মিয়ার স্ত্রী ।
নিহত পারুলের দেবর জিয়া উদ্দিন সোহাগ জানান, “ছোট ছেলে তন্ময় বাড়ি ফিরে মায়ের নিথর ও রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিলে লোকজন সেখানে জড়ো হয়। দুর্বৃত্তদের লাঠির আঘাতে পারুলের মাথায় রক্তক্ষরণ হয় এবং একই সময়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে। ”
নিহতের ছোট ছেলে তন্ময় বলেন, “আমার বোন মাকে বারবার মোবাইলে কল দিয়ে সাড়া না পেয়ে আমাকে জানালে রাত ১১টার দিকে বাড়িতে এসে ঘরের দরজা খোলা পাই। পরে ভেতরে ঢুকে মায়ের গলায় কাপড় প্যাঁচানো মরদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখি।”
তন্ময় আরও বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে আমার মাকে হত্যা করা হতে পারে। হত্যাকারীরা ঘরে লুটপাট করে সবকিছু নিয়ে গেছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমার মায়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই।”
নিহতের বড় ভাই ও জায়লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন চৌধুরী বলেন, “পারুলের স্বামী ও বড় ছেলে প্রবাসে থাকেন। তিন সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে ফেনী শহরে গিয়েছিল। একমাত্র মেয়েরও বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলের বউ (পুত্রবধূ) বাপের বাড়িতে বেড়াতে গেছে। তাই ঘটনার সময় বাড়িতে পারুল একাই ছিল।”
এলাকাটি দাগনভূঞা ও ফেনী সদরের সীমান্তবর্তী হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন।
তিনি আরও বলেন, “গত দুই থেকে আড়াই বছর আগেও এই বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই মামলায় যারা জামিনে রয়েছেন তাদের সাথে এ ঘটনার সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা পুলিশ যাচাই-বাছাই করতে পারে।”
ওসি আবুল হাসিম জানান, খবর পেয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জাকির হাসান বলেন, “কে বা কারা কোন উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটাল তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। দ্রুতই হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে।”