কেরানীগঞ্জে হাসপাতালে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু, চার চিকিৎসকসহ গ্রেপ্তার ৫

স্বজনরা বলছেন, মঙ্গলবার দুপুরেও হেঁটেই অপারেশন থিয়েটারে গিয়েছিল তনয়া। কিন্তু ফেরে লাশ হয়ে। 

কেরানীগঞ্জ-দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 March 2024, 08:35 AM
Updated : 20 March 2024, 08:35 AM

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় হাসপাতালে অপারেশন করাতে গিয়ে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ‘ভুল চি‌কিৎসায় শিশুটিকে হত্যা’র অভিযোগে মামলা করেছে তার পরিবার।  

মামলার পর হাসপাতালের চার চিকিৎসক ও ম্যানেজারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দ‌ক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাহাবুব আলম। 

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় বসুন্ধরা-আদদ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করাতে গিয়ে মারা যান তা‌ছিয়া জাহান তনয়া (১২)। 

তনয়া মাগুরা জেলার রাজাপুরের বাসিন্দা মনিরুজ্জামানের মেয়ে। চাকরির কারণে মনিরুজ্জামান পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে থাকেন। তনয়া সোনারগাঁও উদয়ন আদর্শ বিদ‌্যা‌নিকেতনে ৫ম শ্রেণিতে পড়ত। 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন- ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শামসুদ্দিন আহমেদ হিরা (৪৫), ডা.  তাসফিয়া মাহমুদ (৩৩), ডা. আজমেরী (৩৩), ডা. নিহাল মুহাম্মদ (২৭) ও হাসপাতালের ম্যানেজার আনোয়ারুল হোসাইন শিমুল (৩৩)। 

তনয়ার বাবা ম‌নিরুজ্জামান জানান, “আমার মেয়ে সবসময় হাস্যোজ্জ্বল থাকতো। মাঝে মাঝে ওর পেটে ব্যথা হতো। সোমবার ওর প্রচণ্ড পেটে ব্যথা করলে ওকে আমরা কেরানীগঞ্জের আদদ্বীন হাসপাতালে নিয়ে যাই। 

“তখন ডাক্তার এটা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা উল্লেখ করে অপারেশন করার কথা বলেন। তখনই মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।” 

স্বজনরা বলছেন, মঙ্গলবার দুপুরেও হেঁটেই অপারেশন থিয়েটারে গিয়েছিল তনয়া। কিন্তু ফেরে লাশ হয়ে।  

ভুল চি‌কিৎসায় তাদের সন্তানকে হত‌্যা ক‌রা হয়েছে অভিযোগ করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা। 

ওসি মাহাবুব আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নিহতের বাবা মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে চিকিৎসায় গাফিলতি ও অবহেলার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। মামলার পর ওই চার চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

এ ঘটনায় তদন্ত চলছে জানিয়ে ওসি আরও জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে এবং যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা। 

এ বিষয়ে জানতে বসুন্ধরা-আদদ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যোগাযোগের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে বলা হয়- ম্যানেজারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিষয়ে অন্য কোনো তথ্য তারা জানেন না।