নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদী পাড়ে বসে মেলা গ্রামীণ মেলা।
Published : 15 Oct 2024, 01:02 AM
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে হয়েছে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা।
উপজেলার বাহাদুরপুর পদ্মা সংলগ্ন ইছামতী নদীতে বাহাদুরপুর ও গেগিরচরবাসীর আয়োজনে সোমবার বিকালে এ বাইচ হয়। এতে আটটি সরেঙ্গা, ছিপ নৌকা অংশ নেয়।
বাহাদুরপুর ও রামকৃষ্ণপুর এলাকার মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ইছামতী নদীর মোল্লাবাড়ি পয়েন্ট থেকে বাইচটি শুরু হয়ে বাহাদুরপুর পয়েন্টে শেষ হয়।
বিকাল থেকে নানা সাজে সজ্জিত নৌকা ও মাল্লার বাইচ শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে।
পুরো সময়জুড়ে ঠিকারি ও কাঁশির বাদ্যের তালে নেচে-গেয়ে, হেইও হেইও রবে এক অনবদ্য আবহ সৃষ্টি হয়।
বিভিন্ন বয়সের মানুষ নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে বাইচ প্রত্যক্ষ করেন।
দর্শকদের করতালি ও হর্ষধ্বনিতে এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।
নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদীপারে বসে মেলা।
মেলার দোকানিরা মুড়ি-মুরকি, মিষ্টি, কসমেটিকস, কুটির শিল্পে উৎপাদিত পণ্য, খেলনাসহ তৈজসপত্র বিক্রি করেন।
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় উপজেলার দিয়াইল গ্রামের বিল্লালের নৌকা চ্যাম্পিয়ন হয়।
এছাড়া তেরোদোনা এলাকার আনোয়ার হোসেনের সোনার চান, কাঞ্চনপুর কুশিয়ারচর এলাকার বারেক গায়েনের গায়েন তরী, ঝিটকার ছোরহাব গাছীর গাজারী তরী, সোনার তরী, সুবোধ সন্নাসির তরী ছাড়া ছোট ছোট কয়েকটি বাইচের নৌকাও প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গণমান্য ব্যক্তিরা বিজয়ী মাল্লাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সব নৌকাকেও পুরস্কার দেওয়া হয়।
গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিন মোল্লা লাভলু বলেন, “একযুগ আগে এখানে গ্রামবাসীর উদ্যোগে নৌকা বাইচের প্রচলন হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর উৎসবের আমেজে এ আয়োজন করি। তবে কোভিড মহামারির সময় বন্ধ ছিল।”
প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এ প্রয়াস অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নৌকা বাইচটি আরো সমৃদ্ধ হয়েছে।”
বাইচ উপভোগ করতে আসা চিকিৎসক সাহিদুর রহমান খান বলেন, “আমি দীর্ঘদিন পর, প্রায় ২০ বছর হবে, এ নৌকা বাইচ দেখলাম। এ বাইচ আমাদের আনন্দ দিয়েছে। এমন বিনোদন সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারলে যুবসমাজ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হবে। মাদক থেকে মুক্তি পাবে।”
ভাই ভাই তরীর বিল্লাল হোসেন বলেন, “বাইচের নৌকার মাল্লা হয়ে তালে তালে বৈঠা মেরে নিজে আনন্দ পাই; নদীর দুই কূলে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদেরও আনন্দ দিই। এটিই আমাদের পরম পাওয়া।”