জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করার সময় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
Published : 04 Aug 2024, 11:05 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁওয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে এক কিশোর নিহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা জজের কার্যালয়, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
রোববার সকাল ১১টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে এই সংঘর্ষের ঘটনা।
জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করার সময় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের বড়মাঠ থেকে আন্দোলনকারীরা হাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের বাস্টস্ট্যান্ডের দিকে রওনা হয়। এ সময় ওই বাসস্ট্যান্ড এলাকা পার হয়ে সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে তারা ব্যাপক ভাঙচুর ও যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পরে মিছিলটি শহরের চৌরাস্তা এলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের ছাদ থেকে এক কিশোর লোহার একটি পাইপ নিচে ফেলতে গেলে সেটি হাইভোল্টেজের কারেন্টের তারের সঙ্গে লাগে; এতে ঘটনাস্থলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এ সময় রাস্তায় দাঁড় করানো বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার পর আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা জজের কার্যালয়ে ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ছাড়া কোর্ট চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি প্রাইভেট কার ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অসংখ্য রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
এদিকে বিকাল ৪টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপি কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এরপর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, “আন্দোলনকারীরা হঠাৎ করে এসে শহরে তাণ্ডব শুরু করে এবং জ্বালাও পোড়াও করতে থাকে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে আমরা কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। আমরা সজাগ রয়েছি।”