বিচারকের নির্দেশে বাদী মিনারা আক্তারকে তাৎক্ষণিক আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
Published : 12 Dec 2023, 12:14 AM
পঞ্চগড়ে হত্যা মামলার আসামিদের জামিন মঞ্জুরের পর বিচারককে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে বাদীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বাদীকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে এ ঘটনা ঘটে বলে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী জানান।
আটক মিনারা আক্তার সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার ইয়াকুব আলীর (৮৩) মেয়ে।
মামলায় বলা হয়েছে, ৫ ডিসেম্বর জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই ভাইয়ের পরিবারের মধ্যে মারামারির সময় ইয়াকুব আলী নিহত হন। সেই ঘটনায় মিনারা বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার আসামিদের মধ্যে ১৪ জন আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। প্রধান আসামিসহ পাঁচজন আদালতে আসেননি। বাদীপক্ষ আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করেন। বিচারক শুনানি শেষে সবার জামিন মঞ্জুর করেন।
তখন মিনারা চিৎকার করে গালিগালাজ শুরু করেন। এবং কাঠগড়া থেকে নামতে নামতে বিচারকের দিকে জুতা ছুড়ে মারেন। যদিও সেটা গিয়ে পড়ে এজলাসের সামনে বসা আইনজীবীদের কাছে। পরে বিচারকের নির্দেশে মিনারাকে তাৎক্ষণিক আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আদালতের বিচারকাজ কিছু সময় ব্যাহত হয়।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী আবু মো. ইউনুস আলী লেলিন। যদিও তিনি এই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত না।
ইউনুস আলী লেলিন বলেন, “নিম্ন আদালতের রায় যদি পছন্দ না হয় তাহলে বাদীর উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে। আজকের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিচারককে যেহেতু স্যান্ডেল মারছে, এরপর যে আইনজীবী বা অন্য কাউকে মারবে না, তা মনে করা যাবে না।
“জামিনের ঘটনাটি আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে আছে। বাদীর উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে”, যোগ করেন আইনজীবী লেলিন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, “কয়েক দিন আগে বাদীর বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে তাদের বাড়িতে কুলখানি হচ্ছে। এ অবস্থায় একটি হত্যা মামলায় সব আসামির জামিন দেওয়া কোনোভাবে কাম্য নয়।
জুতা নিক্ষেপের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে হাবিব বলেন, “বিচারকের এমন আদেশের পর আমরা তাৎক্ষণিক আদালত ত্যাগ করে চলে আসি।”
আসামি পক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, “আসামিদের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছে আদালত। আর মামলার যারা মূল আসামি তারা আত্মসমর্পণ করেননি। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের অধিকাংশই নারী ছিলেন।
“এ ছাড়া আসামিদের বক্তব্য ছিল, ওই ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মামলার জব্দ তালিকা এবং সুরতহাল রিপোর্টের নথিতে মারামারির তথ্য নেই। তাই সার্বিক বিবেচনা করে এই জামিন দেওয়া হয়েছে।”
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী বিকালে বলেন, “সকালে আদালতে একটু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। জেলা ও দায়রা জজ এবং মুখ্য বিচারিক হাকিম মহোদয় ছুটিতে আছেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিও আজ আদালতে আসেননি। এজন্য আপাতত আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে কিছু বলা যাচ্ছে না।”