শাবির ছাত্রী হলে রাতে ‘ফিঙ্গার প্রিন্টে’ প্রবেশ, বিলম্বে শোকজ

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ছয়টি আবাসিক হল রয়েছে; এর মধ্যে তিনটি ছাত্রীদের ও তিনটি ছাত্রদের।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2024, 05:06 PM
Updated : 28 Feb 2024, 05:06 PM

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ছাত্রী হলের প্রবেশমুখেই ‘স্বয়ংক্রিয় গেইট’ চালু হয়েছে। এখন থেকে রাতে প্রবেশের নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলে ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’দিয়ে হলে ঢুকতে হবে ছাত্রীদের।

প্রবেশে বিলম্ব হলে ছাত্রীদের শোকজ ও পরবর্তীতে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রথম ছাত্রী হল’ ও ‘বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী’ হলে এ গেইটের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। আর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধনের সময় থেকেই স্বয়ংক্রিয় গেইট চালু আছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ছাত্রীদের নিরাপত্তা জোরদারের জন্যই এই স্বয়ংক্রিয় গেইট স্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ম শৃঙ্খলায় মধ্যে নিয়ে আসতেই এই উদ্যোগ।

সমভাবে প্রতিটি হলের সেবা বৃদ্ধি ও হলের সার্বিক উন্নয়নের বড় বাজেট দেওয়ার কথা জানান উপাচার্য।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ছয়টি আবাসিক হল রয়েছে; এর মধ্যে তিনটি ছাত্রীদের ও তিনটি ছাত্রদের।

স্বয়ংক্রিয় গেইটের পদ্ধতিগত দিক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির পরিচালক অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসব গেইটের জন্য ছাত্রীদের সব ডাটাবেইজ সংরক্ষিত করা হয়েছে। হলের মূল যে গেইট আছে এর সঙ্গেই রয়েছে স্বয়ংক্রিয় গেইটের ব্যবস্থা।”

তিনি বলেন, “ছাত্রী হলের প্রত্যেকটিতেই প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। কিন্তু এই সময় পর মূল যে কলাপসিবল গেইট রয়েছে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। তখন ছাত্রীদের হলে ঢুকতে হলে স্বয়ংক্রিয় গেইট ব্যবহার করতে হবে; তখন ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে প্রবেশ সুযোগ রয়েছে।”

হল প্রশাসন বলছে, হলে প্রবেশের নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলে যেসব ছাত্রী প্রবেশ করবেন তাদের ডাটা সংরক্ষিত থাকবে।

পরে হল অফিসে গিয়ে তাদের দেরি হওয়ার যৌক্তিক কারণ বলতে হবে।

যৌক্তিক কারণ না দেখাতে পারলে বা প্রতিনিয়ত নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নেওয়ার কথা জানান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

স্বয়ংক্রিয় গেইট উদ্বোধনের সময় তিনি আরও বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ কাজে ছাত্রীরা রাত সাড়ে ১০টার পর ও সকাল ৬টার আগেও বের হতে পারবেন। কিন্তু প্রতিদিন বিলম্ব করে হলে ফিরলে ওই শিক্ষার্থীকে শোকজ করার পাশাপাশি তার হলের সিট বাতিল করা হবে।”

স্বয়ংক্রিয় প্রবেশ গেইট উদ্বোধনকালে উপ উপাচার্য অধ্যাপক মো. কবির হোসেন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলাম, বর্তমান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন, ভূসম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ শাখার প্রধান অধ্যাপক রোমেল আহমেদ, আইআইসিটির পরিচালক অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান, শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট চন্দ্রানী নাগ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হাকিম, হল প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট মিজানুর রহমান খান, প্রথম ছাত্রী হলের প্রভাস্ট জায়েদা শারমিন ও বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জোবেদা কনক খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট মনিরুজ্জামান সোহাগ, সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট আবু সাঈদ আরফিন খাঁন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, গেইটের ব্যবহারবিধি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বয়ংক্রিয় গেইট দিয়ে ছাত্রীরা শুধু হলে প্রবেশ করতে পারবেন। কিন্তু ভেতর থেকে বাইরে আসা যাবে না। তাছাড়া ওই গেইটের পাশে সিসি ক্যামেরাও রয়েছে। নির্দিষ্ট সময় পরে একসঙ্গে যদি ৪/৫ জন স্বয়ংক্রিয় গেইট দিয়ে প্রবেশ করে তাহলে ক্যামেরায় এর রেকর্ড থাকবে। মূলত নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্যই এ ব্যবস্থা বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য।