বৈরী আবহাওয়া ও রাত হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
Published : 20 Jun 2024, 10:06 PM
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তিস্তা নদীতে নৌকা ডুবির ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ ছয়জনের সন্ধান মেলেনি।
এরমধ্যে বৈরী আবহাওয়া ও রাত হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার নতুন করে কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ডুবুরিরা সুবিধা করতে পারছেন না। তাই শুক্রবার সকাল পর্যন্ত উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ২৫জন যাত্রী নিয়ে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সাপটানা এলাকায় বিয়ের দাওয়াতে যাওয়ার পথে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
বুধবার রাতেই দশ বছরের শিশু আয়শা খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরি দল। আয়শা উলিপুর উপজেলার বজরা গ্রামের জয়নালের মেয়ে।
বৃহস্পতিবার বিকালে নৌকার যাত্রী বজরা মিয়াজিপাড়ার আমজাদ হোসেনের ছেলে আরিফুল ইসলাম বলেন, “আমরা বিয়ের দাওয়াত খাওয়ার উদ্দেশ্যে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সাপাটানা যাচ্ছিলাম। বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাসের ফলে বজরার সাতালস্কর এলাকায় হঠাৎ করে নৌকাটা ডুবে যায়। আমি কোনো রকমে সাঁতরে তীরে গিয়ে পৌঁছাই।
“এ সময় ২৫জনের মধ্যে আমরা মোট ১৮জন পাড়ে উঠতে পারি। কিন্তু সাত জনকে পাওয়া যায়নি। পরে আজিজুর রহমানের মেয়ে আয়শা খাতুনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত আমার ভাগনে আনিছুর রহমান (৩০), তার স্ত্রী রুপালী বেগম (২৫), মেয়ে আইরিন (৯), আনিছুরের ভাগ্নি হীরামণি (৮), আমার ভাস্তি কয়জন আলীর মেয়ে কুলসুম (৩) ও আজিজুর রহমানের ছেলে শামিমকে (৫) পাওয়া যায়নি।”
নৌকার যাত্রী আমিনা বেগম জানান, “নৌকাটিতে আমার মা ও ভাতিজাসহ পরিবারের চারজন ছিলেন। দাওয়াত খেতে যাওয়ার সময় তিস্তার খরস্রোতে নৌকাটি ডুবে যায়। আমরা কোনো রকমে সাঁতরিয়ে তীরে উঠলেও ভাতিজা শামিম ডুবে যায়। তাকে এখনো পাওয়া যায়নি।”
অপর যাত্রী শরিফা বেগম জানান, “নৌকা ডুবির সময় আমার তিন বছরের শিশু কুলসুম নদীতে ডুবে যায়। আমি প্রচুর পানি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। দুপুর পর্যন্ত উলিপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর আজ (বৃহস্পতিবার) বাড়ি ফিরেছি।”
কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, “বৈরী আবহাওয়ায় ডিঙি নৌকায় করে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার সাপাটানা এলাকায় যাওয়ার সময় নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় এখনো ছয়জন নিখোঁজ রয়েছে বলে এলাকাবাসী দাবি করছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দিনভর রংপুর থেকে আসা ছয়জন ডুবুরি এবং কুড়িগ্রাম থেকে পাঁচজন সাহায্যকারীসহ মোট ১১জন উদ্ধার কাজ পরিচালনা করছেন। তবে নতুন করে কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।”
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, “নৌকার যাত্রীদের কথামতো নৌকায় থাকা আরও ছয়জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তাদের উদ্ধারে রংপুর থেকে ডুবুরির দল তিস্তা নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
আগের সংবাদ
কুড়িগ্রামের তিস্তায় নৌকা ডুবি: শিশু নিহত, কয়েকজন নিখোঁজের দাবি