হলের পরিচয়পত্র একটি সাধারণ কাগজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
Published : 16 Jan 2024, 11:10 PM
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সব ধরনের ফি অনলাইনে পরিশোধের সুযোগ থাকলেও আবাসিক হলের ক্ষেত্রে তা সনাতন পদ্ধতিতে রয়ে গেছে।
হলের পরিচয়পত্র শুধুমাত্র একটি সাধারণ কাগজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ; এ ছাড়া মেয়েদের হলগুলোতে নেই আলাদা কোনো পরিচয়পত্র।
২০২০ সাল থেকে ইলেক্ট্রনিক পেমেন্ট পদ্ধতিতে (সাস্ট ই-পেমেন্ট) বিভিন্ন ফি দেওয়ার সুযোগ থাকলে গত তিন বছরে হল ভর্তি ফি অনলাইনে প্রদান কার্যক্রমের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। এখনও ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে ফি পরিশোধ করতে হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে হলের ভর্তি ফি, আলাদা পরিচয়পত্র এবং ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদের মাধ্যমে ডিজিটালাইশনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
তবে এসব উন্নয়ন কার্যক্রম ‘অগ্রগতির দিকে’ রয়েছে বলে হল কর্তৃপক্ষের ভাষ্য।
২০২০ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ভর্তি, প্রভিশনাল ও মূল সনদপত্র উত্তোলন ফি, লাইব্রেরি বিলম্ব ফি, মিডিয়াম অব ইন্সট্রাকশন, মাইগ্রেশন, ক্রেডিট, গ্রেডশিট, ট্রান্সক্রিপ্ট, ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন, অ্যাপ্লাই ফর ট্রান্সক্রিপ্ট ফি অনলাইনে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি ই-সনদ পদ্ধতিও চালু করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কার্যক্রমের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ এখন ডিজিটাল নথির মাধ্যমে হচ্ছে। প্রোগ্রামের জন্য কক্ষ ও অডিটরিয়াম বরাদ্দসহ অনেক কাজই অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে। কিন্তু হল প্রক্রিয়ায় এখনো ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লাগেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ছয়টি আবাসিক হলে মোট আসন রয়েছে প্রায় তিন হাজার। এরমধ্যে ছাত্রদের তিনটি হলে আলাদা পরিচয়পত্র রয়েছে। কিন্তু ছাত্রী হলে তেমন কোনো পরিচয়পত্র নেই। তবে ২০০৫ সালের দিকে প্রথম ছাত্রী হলে আলাদা পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করা হলেও সেই কার্যক্রম পরবর্তীতে আর এগোয়নি।
হলের ভর্তি ফি ও পরিচয়পত্র স্মার্ট করার দাবি জানিয়ে শাহপরাণ ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলের অন্তত ১০ শিক্ষার্থী জানান, হলে অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রমের মাধ্যমে আবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেকটা কমবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল পরিচয়পত্রের সঙ্গে হলের পরিচয়পত্র নতুন কোনো পদ্ধতিতে যোগ করলে সেটি ভালো হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রী হলের দুইজন শিক্ষার্থী জানান, ছাত্রী হলে তেমন কোনো পরিচয়পত্র দেওয়া হয় না। তবে প্রতিদিন হলের কক্ষে কক্ষে গিয়ে কর্মকর্তারা নাম এন্ট্রি করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি তানভীর রহমান বলেন, হলের যে কাগজের পরিচয়পত্র সেটি তেমন মানসম্মত নয়। সামান্য বৃষ্টিতে ভিজলে নষ্ট হয়ে যায়। আর এটা যে কেউ তৈরি করতে পারবেন।
শাহপরাণ হলের আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পিকার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তীর্থ দাশ বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রে থাকা ‘বার কোড স্কেন’ করে লাইব্রেরিতে এন্ট্রি, বই নেওয়া ও জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
“আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্রে কিংবা আলাদা কার্ডের মাধ্যমে এরকম ব্যবস্থা করা যেতে পারে।”
ওয়েবসাইটে আবাসিক শিক্ষার্থীদের তথ্যও যোগ করার দাবি জানান এই শিক্ষার্থী।
হল প্রক্রিয়ার বিষয়টি এনালগ থেকে ডিজিটালাইজেশনের দিকে কীভাবে নেওয়া যায়, সে বিষয় হল প্রভোস্টদের দ্বারা গঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক চন্দ্রানী নাগ।
হলে ভর্তি কার্যক্রমে ডিজিটালাইজেশনের কাজ অগ্রগতির দিকে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহের স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান।