ঘূর্ণিঝড় মোখা: শঙ্কা কাটিয়ে স্বস্তিতে বরিশাল, সংকেত কমেছে

সকাল ৯টা থেকে দুপর ৩টা পর্যন্ত ভরা জোয়ারেও দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও তেমন জলস্ফিতি লক্ষ্য করা যায়নি।

বরিশাল প্রতিনিধি
Published : 14 May 2023, 02:27 PM
Updated : 14 May 2023, 02:27 PM

ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্ক পেরিয়ে স্বস্তি ফিরেছে বরিশালে। রোববার বিকালে বরিশাল নৌ-বন্দরের সতর্কতা সংকেত ২ নম্বরে নামিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া কার্যালয়।

তবে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের চর ও নিম্নাঞ্চলে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত বহাল রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল আবহাওয়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. মাসুদ রানা রুবেল।

তিনি বলেন, “সংকেত নামিয়ে আনা হলেও ঘূর্ণিঝড়ের পর ২৪ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা থাকে। সে কারণেই নদীবন্দরের জন্য সংকেত কমানো হলেও নিম্নাঞ্চিল ও চরাঞ্চলে ৮ নম্বর সতর্ক/মহাবিপদ সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।”

তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রকাশিত সবশেষ ২১ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়েছে, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ কয়েকটি নদীবন্দরকে চার নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

মোখার প্রভাবে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের আকাশ মেঘলা রয়েছে জানিয়ে এ উচ্চ পর্যবেক্ষক বলেন, “১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বইছে। মাঝে মাঝে বাতাসের গতিবেগ ২২ কিলোমিটার গতিতে দমকা হাওয়া সৃষ্টি করছে।”

আবহাওয়া কার্যালয় জানিয়েছে, বরিশালে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছিল; যা পরিমাপযোগ্য নয়। তবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি বিজ্ঞান উপ-বিভাগ এক বার্তায় জানিয়েছে, সকাল ৯টা থেকে দুপর ৩টা পর্যন্ত ভরা জোয়ারেও দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও তেমন জলস্ফিতি লক্ষ্য করা যায়নি। সকাল ৯টার দিকে জোয়ার শুরু হলেও দুপুর ৩টা পর্যন্ত পানির প্রবাহ ও স্ফিতি বিপৎসীমার নিচেই ছিল।

সতর্ক সংকেত ২ নম্বরে নেমে এলেও বরিশাল-ঢাকাসহ অভ্যন্তরীন ১২ টি রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোন লঞ্চ ছেড়ে যাবে না। সোমবার থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হতে পারে।”

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত মোকাবেলায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৩ হাজার ১০১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ৩৫টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এসব আশ্রয়কেন্দ্র এবং কিল্লায় প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ নারী-পুরুষ ও শিশুর পাশাপাশি প্রায় সাড়ে ১২ লাখ গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা সম্ভব।

শনিবার মধ্যরাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত এসব আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু আশ্রয় নিয়েছিলেন। এবার প্রায় ৭ হাজার গবদিপশুকেও নিরাপদ আশ্রায়ে নেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে বিভাগীয় প্রশাসন।

সাগর উপকূলের জেলে পল্লীগুলোও নিরাপদ রয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কলাপাড়ার আলীপুর, মহীপুর, চরমোন্তাজ, হরিনঘাটা, পাথারঘাটা, ঢালচর, চরকুকরী-মুকরী, রাঙ্গাবালী, খেপুপাড়া ও পাড়ের হাটসহ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ নিরাপদে রয়েছেন।

কুয়াকাটা আশার আলো জেলে সময়বায় সমিতির সভাপতি নিজাম শেখ বলেন, কুয়াকাটার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কুয়াকাটা সৈকত কেন্দ্রিক সাড়ে ১৩শ জেলে নিরাপদে আছেন।