কুড়িগ্রামে ছত্রাকে ভুট্টায় পচন, বিপদে চাষিরা

কুড়িগ্রামে ছত্রাকের আক্রমণে অপরিপক্ক ভুট্টায় পচন ধরায় পুঁজি হারানোর শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন চাষিরা।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2022, 04:03 AM
Updated : 19 April 2022, 04:03 AM

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার ধরলা নদীর অববাহিকায় সারডোব চরাঞ্চলে দিগন্তজুড়ে ভুট্টা ক্ষেত।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, চলতি বছর সদর উপজেলায় ভুট্টা চাষ করা হয়েছে ৭২০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ১০ হেক্টরের ভুট্টা নষ্ট হয়েছে ‘ব্লাস্ট’ রোগে।  

"ধারণা করা হচ্ছে যেসব কৃষক নতুন জাতের বীজ লাগিয়েছেন তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন," বলেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

গতবার যে ভুট্টার দাম ছিল ৭০০টাকা সেই দাম উঠেছে এখন ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা

চর সারডোব এলাকার ভুট্টা চাষি সামাদের ক্ষেতের ভুট্টা নষ্ট হওয়ায় পুঁজি নিয়ে টানাটানি পড়ে গেছে।

"আমি ২ লাখ টাকা খরচ করে ৪ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। কিন্তু রোগে আক্রান্ত হয়ে আমার দুই একর ভুট্টা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমার আসল নিয়ে টানাটানি পড়ে গেছে।"

ব্যাংক থেকে ঋণ এবং সূদে টাকা নিয়ে চাষাবাদ করা সন্ন্যাসী গ্রামের ভুট্টা চাষি নজরুল হোসেনের অর্ধেক জমির ভুট্টাই শেষ ছত্রাক রোগে।

নজরুল বলেন, "কৃষি ব্যাংক থাকি ঋণ নিয়েছি। পরে টাকা শর্ট পড়ায় লাভের উপর টাকা নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছি। ভেবেছিলাম ভুট্টা তুলে পরে টাকা পরিশোধ করব। এখন দেখি অর্ধেক জমির ভুট্টা শেষ। বাকিটা ঔষধ স্প্রে করে রক্ষা করেছি। এখন আমি মাঠে মারা গেলাম।"

সামাদ ও নজরুল হোসেনের মত প্রায় একই অবস্থা হয়েছে এখানকার অন্য ভুট্টা চাষিদের।

আবাদ খরচ তোলা ব্যাংক-এনজিওর ঋণ পরিশোধের চিন্তাতেই নাকাল ভুট্টা চাষীরা

সামাদ জানান, গতবার যে ভুট্টার দাম ছিল ৭০০ টাকা ছিল, এবার সেই ভুট্টার দাম উঠেছে ১১শ’ থেকে ১২শ’ টাকা বলে জানান ভুট্টা চাষী সামাদ। কিন্তু দাম বাড়লেও ভুট্টা নষ্ট হওয়ায় লাভ তো দূরে থাক আবাদের খরচ তোলা আর ব্যাংক-এনজিওর ঋণ পরিশোধের চিন্তাতেই নাকাল চাষিরা।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন জাতের ভুট্টার বীজেই সমস্যা ছিল। দেরিতে রোগ ধরা পরায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটাও বেশি হয়েছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হবে।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো. শামসুদ্দিন মিঞা বলেন, "আমাদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির কোনো হিসাব নাই। তবে বৃষ্টিতে ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় ১ হেক্টর ভুট্টা নিমজ্জিত হয়েছে"