১৮ বছর ধরে শিশুরা লিখছে ‘রক্তে জেতা’ বর্ণমালা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাঙামাটিতে টানা আঠারো বছরের মতো আয়োজিত হলো অমর একুশের চিত্রাঙ্কন, বর্ণলিখন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা।

রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Feb 2022, 08:02 AM
Updated : 21 Feb 2022, 08:02 AM

‘এসো রক্তে জেতা বর্ণমালা সুন্দর করে লিখি’- স্লোগানে একুশের সকালে রাঙামাটি শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান।

বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ স্মারকভাস্কর্য চত্বরে চিত্রাঙ্কন ও বর্ণলিখন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দুই শতাধিক শিশু-কিশোর। আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষুদে আবৃত্তিকাররা অংশ নেন।

২০০৪ সালে আয়োজনটির শুরু করে ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ নামে একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন; সঙ্গে যুক্ত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ডিবেট ফেডারেশন, আবৃত্তি সংগঠন আফ্রোদিতি, শুভসংঘ ও স্কুলবেলা নামক স্থানীয় শিশু-কিশোরদের একটি পত্রিকা।

রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এনামুল হক খন্দকার, শিক্ষাবিদ ও সংগঠক নিরূপা দেওয়ান, রাঙামাটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও গণসঙ্গীতশিল্পী  কালায়ন চাকমা, নাট্যজন ও সংস্কৃতিকর্মী মনি পাহাড়ী তাদের বক্তব্যে শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে মাতৃভাষা চর্চার বিষয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনামূলক বক্তব্য দেন।

অতিথিরা প্রতিযোগিতায় পৃথক পৃথক ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ৮০ শিশু-কিশোরের হাতে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন।

রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এনামুল হক খন্দকার বলেন, “এই আয়োজনটিকে আমি বলব, ছোট শহরের বড় উদ্যোগ। এই দেশে যেকোনো ভালো কাজ যখন দুয়েকবছর করার পর নানান বাধা-বিপত্তিতে মুখ থুবড়ে পড়ে, তখন টানা ১৮ বছর ধরে এমন আয়োজন সাধুবাদযোগ্য। আমি আয়োজকদের অভিনন্দন জানাই এবং প্রত্যাশা করি, আরও বহুবছর ধরে এই আয়োজনটি চলমান থাকবে।”

শিক্ষাবিদ নিরূপা দেওয়ান আয়োজকদের এমন আয়োজনে আশা ছড়ায় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এখনো এই জনপদে আশা-ভরসার প্রতীক এরাই। আমি সবসময় এদের পাশে ছিলাম এবং থাকব।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম ডিবেট ফেডারেশনের সংগঠক তুষার ধর বলেন, “টানা ১৮ বছর ধরে আয়োজিত এই উদ্যোগটি রাঙামাটি শহরের ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গেছে। আমরা সবসময় চেষ্টা করি, শিশু-কিশোরদের সর্বোচ্চসংখ্যক পুরস্কার দিয়ে তাদের সৃজনশীলতার বিকাশে উৎসাহ করতে। এটি নিয়মিতভাবেই আয়োজনের ইচ্ছা আছে আমাদের।”

গণসঙ্গীত শিল্পী কালায়ন চাকমা বলেন, “শিশুদের জন্য এমন ধারাবাহিক উদ্যোগ আমাদের আশাবাদী করে তুলে। নিশ্চয়ই আঁধার ভেদ করে একদিন আলো আসবেই।”

অনুষ্ঠানে আফ্রোদিতির সংগঠক সাইফুল হাসান, শুভসংঘের সভাপতি মং চিং মারমা বক্তব্য দেন।

পুরস্কার বিতরণ শেষে বিজয়ী ও প্রতিযোগীদের নিয়ে শহীদ মিনারের বেদীতে দেশাত্ববোধের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়।