শাবিতে আন্দোলন গড়াল চতুর্থ দিনে

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার পদত্যাগসহ তিনদফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন ওই হলের ছাত্রীরা।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2022, 07:13 AM
Updated : 16 Jan 2022, 07:25 AM

রোববারও ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে গোলচত্বরের পাশে এক কিলোমিটার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে যানবাহন চলাচলও করতে দিচ্ছেন না আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রীদের দাবি ও আন্দোলনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কিছু জানানো হয়নি। তাই তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছে।

প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন ওই হলের ছাত্রীরা।

এ সময় উপাচার্য বাসভবন থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে ছাত্রীরা হলে ফিরে যান। শুক্রবার উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার পর সমাধান না পেয়ে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে হলের পানি, সিট, ইন্টারনেট সংযোগ, খাবারসহ বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনার পর ছাত্রীরা হল প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদকে ফোন করে সমস্যার কথা জানান এবং অল্প সময়ের জন্য হলে আসার অনুরোধ করেন। এ সময় প্রভোস্ট হলে আসতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করেন।

আন্দোলনের মধ্যে শুক্রবার বেলা ১১টায় উপাচার্যের কার্যালয়ে তিন দফা দাবি লিখিতভাবে জমা দেন ছাত্রীরা। দাবিগুলো হল- প্রভোস্ট কমিটিকে পদত্যাগ করতে হবে, হলের সব ধরনের অব্যবস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং অবিলম্বে ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রভোস্ট নিয়োগ দিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রী জানান, তাদের লিখিত দাবির প্রেক্ষিতে শুক্রবার বেলা ১২টায় ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধিদলকে ডেকে পাঠান উপাচার্য। কিন্তু প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক ঘণ্টা আলাপ করেও সুষ্ঠু সমাধান দিতে পারেননি উপাচার্য। পরে শতাধিক আবাসিক ছাত্রী উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও করে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন।

এদিকে ছাত্রীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যেই শুক্রবার সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলে জোবেদা কনক খানকে ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় এই হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজাকে ছুটিতে পাঠিয়ে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চলমান ওই আন্দোলনে শনিবার সন্ধ্যায় হামলার অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। প্রক্টরের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরের পাশে এই হামলা হয় বলে ছাত্রীরা অভিযোগ করেন। এতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।