হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জরুরি বিভাগের ডা. মনির আলী আকন্দকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে অপর তিনজনের মধ্যে রয়েছেন দুইজন নার্স ও একজন ওয়ার্ড বয়।
অভিযোগ উঠেছে, দুর্ঘটনায় আহত গাইবান্ধার এক স্কুলছাত্রকে মঙ্গলবার হাসপাতালে আনা হলে ওয়ার্ডে নেওয়ার পর আসাদুল ইসলাম মীর ধলু নামের এক পরিচ্ছন্নতা কর্মী বকশিস খোঁজেন। কিন্তু ওই ছাত্রের অভিভাবক চাহিদামতো বকশিস দিতে না পারায় ধলু অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন। এরপর কিশোরের মৃত্যু হয়।
ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধলু কোনো সরকারি কর্মচারী নন। মাঝে মাঝে হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে অনিয়মিতভাবে কাজ করেন।
তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা তদন্তে প্রমাণিত হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ওয়াদুদ জানান।
বগুড়া সদর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, গ্রেপ্তার ধলুকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
গাইবান্ধার সাঘাটায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত হয় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া বিকাশ চন্দ্র দাশ।
নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে একটি ওয়েল্ডিংয়ের দোকানে কাজ করত ১৭ বছর বয়সী এই কিশোর। কাজ শেষে দোকান থেকে সে বাড়ি ফিরছিল।
দুর্ঘটনার পর পরিবারের লোকজন আহত বিকাশকে প্রথমে সাঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে চিকিৎসকরা বিকাশকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে তিনতলায় নিউরো ওয়ার্ডে ভর্তি লিখে দেন। ট্রলিতে করে ধলুর সহায়তায় তিনতলায় আসে পরিবার। কিন্তু সেখানে বেড খালি না থাকায় বিকাশকে মেঝেতেই রাখা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “রোগী রাখার পর ধলু দুইশ টাকা চায়। দরিদ্র পরিবারটি দেড়শ টাকা দিতে সক্ষম হয়। কিন্তু ধলু দুইশ টাকা না নিয়ে যাবেন না। তিনি রাগারাগি করতে থাকেন।
“বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তিনি পা দিয়ে মেঝেতে থাকা রোগীর নাক থেকে অক্সিজেনের মাস্ক এবং নলটি খুলে ফেলেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় বিকাশের।”
অক্সিজেন খুলে নেওয়ার ফলেই যে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ র্যাবকে জানিয়েছে বলে আল মঈন জানান।