কুমিল্লা ইপিজেডের বিষাক্ত তরল বর্জ্যে দূষিত পরিবেশ

কুমিল্লা ইপিজেডসহ আরও দুটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিষাক্ত তরল বর্জ্য আশপাশের পরিবেশ দূষিত করে তুলেছে।

কাজী এনামুল হক কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2021, 05:32 PM
Updated : 10 Oct 2021, 05:32 PM

এর থেকে পরিত্রাণ পেতে রোববার স্থানীয়রা কুমিল্লা সিটি মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

দুপুরে কুমিল্লা নগর ভবনে মেয়রের হাতে স্মারকলিপি দেন সাবেক সাংসদ মনিরুল হক চৌধুরী।

এ সময় মনিরুল হক চৌধুরী জমির ফসল ও লক্ষাধিক পরিবারের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এর প্রতিকারের দাবি জানান।

অন্যথায় নগর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

স্মারকলিপিতে যাত্রাপুর গ্রামের বিশিষ্ট সমবায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম ও দিশাবন্দ গ্রামের মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষর করেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, কুমিল্লা নগরীর বর্জ্য ও পানি তিনটি খাল দিয়ে দক্ষিণের ডাকাতিয়া নদীতে প্রবাহিত হয়। এসব খালের পানির সঙ্গে ইপিজেডের বিষাক্ত রাসায়নিক তরল বর্জ্য দিশাবন্দ, ঢুলিপাড়া, কাজীপাড়া, উত্তর হীরাপুর, শ্রীবল্লভপুর, গোপীনাথপুর, দক্ষিণ রামপুর, দুর্গাপুর, হোসেনপুর, নোয়াপাড়া, শ্রীনিবাস, উত্তর বিজয়পুর, ছনগাঁওসহ শহরের দক্ষিণাংশের অর্ধশতাধিক গ্রামের কৃষি জমি, খাল-বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের পানিতে মিশছে।

এছাড়া দক্ষিণ দুর্গাপুরের সফিউল আলম স্টিল মিল ও বাতাবাড়িয়ার সামিট গ্রুপের বিদ্যুৎ প্রকল্পের বর্জ্য পানিতে মিশে কৃষি জমির ফসল, গাছ-পালা, বাড়িঘর ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে।

এর প্রতিকার করা না গেলে শহরের দক্ষিণের অন্তত ৪০ কিলোমিটার এলাকার লক্ষাধিক পরিবারের মানুষকে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।

এ সময় মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, এ বিষয়ে শিগগির একটি কমিটি করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে সার্ভে করে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে এবং প্রতিকারের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করলেও তারা ২ ঘণ্টার বেশি কাজ করে না, বাকি বর্জ্য শোধন ছাড়াই ড্রেনে ছেড়ে দেওয়ায় এমন ক্ষতি হচ্ছে।

তারা কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে তিনিও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ইপিজেডের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে এর প্রতিকারের উদ্যোগ নেবেন বলে এলাকার জনগণকে আশ্বস্ত করেন।

তবে ইপিজেডের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে বলে দাবি করেন কুমিল্লা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জিল্লুর রহমান।

তিনি বলেন, “আমরা নিজেদের বর্জ্য নিজেরা নিয়ন্ত্রণে রাখি। কুমিল্লা শহরের পানি ও বর্জ্য ইপিজেডের পাশের বড় ড্রেন দিয়ে খালে প্রবাহিত হয়ে একাকার হয়। নগরীর পানি প্রবাহের প্রক্রিয়া আরও উন্নত করা হলে পরিবেশ দূষণ কমে যাবে।”