নেত্রকোণার মণ্ডপগুলোতে মহাসমারোহে দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের আয়োজন চলছে। প্রতিমা কারিগরেরা রং তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে পুরোপুরি সাজিয়ে নিচ্ছেন। মণ্ডপগুলোকে আকর্ষণীয় করতে তৈরি করা হচ্ছে বাহারী প্যান্ডেল।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ সাহা রায় জানান, পারিবারিক ও সার্বজনীন মিলিয়ে নেত্রকোণায় গত বছর ৫০৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ বছর ৩৫টি বেড়ে ৫৪০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিমা কারিগর সাধন পাল বলেন, খের, বাঁশ, মাটি, সুতলি, তার ও লোহা দিয়ে প্রতিমা তৈরি করতে হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সব কিছুর দাম বেড়েছে। আগে যে প্রতিমা গড়তে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিছি এইবার তা ৪০ থেকে ৫০ হাজারে করতে হইতাছে।
“এবার চারটা মন্দিরের প্রতিমা তৈরির কাজ পাইছি; এখন রংয়ের কাজ করতাছি। আমার সঙ্গে আরও ৪/৫ জন কাজ করে। তাদের টাকার ভাগ দেওয়ার পর আর তেমন কিছুই থাকবে না। এইবার লাভ অইতো না।“
আরেক কারিগর অঘর পাল বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের হাতে তেমন টাকা নাই। এই জন্য মণ্ডপগুলোতে বাজেট কমে গেছে। যে রকম আশা করছিলাম, তার ধারের কাছেও দাম পাইতাছি না।”
এবছর ছয়টি দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছেন কারিগর নিখিল পাল। তিনি সুনামগঞ্জেও প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন।
নিখিল বলেন, “কাজতো করতাছি। কিন্তু লাভ নাই। প্রতিমা বানানোর সব উপকরণের দামই বাড়ছে। বাপদাদার পেশা তাই করি।”
নেত্রকোণা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মঙ্গল সাহা বলেন, “এবার পূজা মণ্ডপের সংখ্যা গতবারের চেয়ে বেড়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক টানাপোরেন আছে। বাজেট কম।তাই প্রতিমা কারিগররাও মূল্য কিছুটা কম পাচ্ছেন।মণ্ডপগুলোতে সাজসজ্জাও কম করা হয়েছে।
এরপরেও আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা করেন পূজা পরিষদের এ নেতা।
জেলার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বলেন, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে এরই মাঝে সমন্বয় সভা করা হয়েছে। মন্দিরগুলোতে প্রয়োজন অনুসারে স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনে সামগ্রী রাখা হয়েছে। সাদা পোশাকে পুলিশ ও টহল দল থাকবে।
বড় আয়োনের মন্দিরগুলো সমাগম বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।