তমিস্রার মত মেয়েদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখাতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মার্শাল আর্টের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন স্থানীয় উদ্যমী তরুণ রিয়াজ উদ্দিন।
তার প্রতিষ্ঠিত ‘শ্রীমঙ্গল মার্শাল আর্ট একাডেমিতে’ এখন নিয়মিত ক্লাস করতে আসে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী, তাদের বেশিরভাগই মেয়ে। তবে তুলনামূলকভাবে রক্ষণশীল সমাজে তাদের আগ্রহী করে তোলা সহজ ছিল না।
তবে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেতে তাকে সহায়তায় করেছে শ্রীমঙ্গল রোটারি ক্লাব এবং পল হ্যারিস ইন্টার ন্যাশনাল স্কুল।
“নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এই প্রতিষ্ঠান এখন এ অঞ্চলে আগামী দিনের সাহসী নারী শক্তির প্রতীক বলা যায়,“ বলেন রিয়াজ।
মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্টধারী রিয়াজ শ্রীমঙ্গলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করেন। স্কুল খুলেছেন নতুন প্রজন্মের জন্য কিছু করার আগ্রহ থেকে।
স্থানীয় কয়েকজনের সাহায্যে গতবছর রোটারি ক্লাব এবং পল হ্যারিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মাঠটি ব্যবহারের অনুমতি নেন রিয়াজ। সেখানেই শুরু হয় তার মার্শাল আর্টের ক্লাস।
একজন দুইজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে থাকে। এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান রিয়াজ।
একজন মার্শাল আর্ট জানা মেয়ে সমাজে আরও দশজন মেয়েকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে বলেই রিয়াজের বিশ্বাস।
একই বিশ্বাস তৈরি হতে শুরু করেছে তার একাডেমির ছাত্রী তমিস্রা সিসিলি ভৌমিকের মধ্যে।
সে বললো, “মার্শাল আর্ট শেখার আগে আমি নাচ শিখতাম। এখন মর্শাল আর্ট শিখতেই বেশি ভালো লাগে। আমি কোনো ক্লাস মিস করি না। মার্শাল আর্ট ক্লাস করার পর নিজেকে অনেকটা ঝরঝরা মনে হয়; মনও ভালো থাকে।
“এটা আমাকে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। আমি মনে করি লেখাপড়ার পাশাপাশি মেয়েদের এটা শেখার প্রয়োজন আছে।”
তমিস্রার বাবা মৌলভীবাজার হাসপতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিনেন্দু ভৌমিক বলেন, চীন, জাপান ও কোরিয়া মার্শাল আর্টসকে রীতিমত উপাসনার জায়গায় নিয়ে গেছে।
“এর বহুমুখী উপকার রয়েছে। এটা মেয়েরা রপ্ত করতে পারলে তারা আত্মরক্ষার কৌশল জানবে, সমাজকে কুসংস্কার থেকে দূরে রাখতে পারবে। এটা ব্যয়ামের কাজও করবে।”
শ্রীমঙ্গল রোটারি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান রিপন বললেন, শুরুর দিকে শিক্ষার্থী মিলবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন রিয়াজ। তবে তার স্কুল এখন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই মার্শাল আর্ট একাডেমির কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী ইতোমধ্যে হলুদ ও কমলা, সবুজ ও নীল বেল্ট পেয়েছে। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তাদের বেল্ট পরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান পল হ্যারিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক দিল আফরোজ রুহিন।