পদ্মা সেতুতে আবার ফেরির ধাক্কা: থানায় জিডি

পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিয়ারে আবার ফেরির ধাক্কার ঘটনায় লৌহজং থানায় জিডি করেছে কর্তৃপক্ষ।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2021, 08:55 AM
Updated : 10 August 2021, 08:55 AM

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের জানান, সোমবার রাত ১১টার দিকে তিনি নিজে এই জিডি করেন।

সোমবার সন্ধ্যায় বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নামে একটি রো রো ফেরি পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিয়ারে ধাক্কা দেয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। ফেরিতে থাকা দুটি প্রাইভেট কার ও একটি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আব্দুল কাদের বলেন, “ফেরির ধাক্কায় সেতুর ১০ নম্বর পিয়ারের পাইল ক্যাপের সামান্য কিছু অংশের কংক্রিট উঠে গেছে। এতে সেতুর তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবু এমন ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়। ফেরির যাত্রী ও যানবাহনের বড় ক্ষতি হতে পারত।”

এ ঘটনায় ওই ফেরির মাস্টার ও সুকানিকে সাময়িক বরখাস্ত করার পাশাপাশি পাঁচ সদষ্যের তদন্ত দল গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিসি। কমিটিকে  তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

মাওয়া নৌপুলিশের আইসি জেএম সিরাজুল কবির বলেন, “ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে মাওয়া আসার পথে পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১০ নম্বর পিয়ারে ধাক্কা দেয়। এতে পিয়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পিয়ারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় ফেরির ধাক্কায় রড বের হয়ে যায়। ফেরিটির পেছনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফেরিতে থাকা একটি গমভর্তি ট্রাক উল্টে দুটি প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে।

“এ সময় একটি কারে ঘুমিয়ে থাকা এক নারী আটকা পড়েন। পরে ট্রাক চালকরা তাকে উদ্ধার করেন।”

আরেক কারের মালিক আবু হানিফ বলেন, তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কারের বাইরে ছিলেন। ধাক্কার সময় পড়ে গিয়ে স্ত্রীর মাথায আঘাত লাগে। আর সন্তানের ঠোঁট কেটে যায়।

বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেন, “ফেরিটি যখন পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে যাচ্ছিল তখন একটি ট্রলার ফেরির সামন দিয়ে যাচ্ছিল। ট্রলারকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রবল স্রোতের মধ্যে পদ্মা সেতুর পিয়ারে ধাক্কা দেয় ফেরিটি।”

ঘাট স্থানান্তরসহ অন্যান্য সুপারিশ নিয়ে মঙ্গলবার  উচ্চপর্যায়ের বৈঠক বসার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান।

এর আগে গত ২৩ জুলাই সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে শাহজালাল নামে একটি রো রো ফেরির সংঘর্ষ হয়। এতে  সেই ফেরির অন্তত ২০ যাত্রী আহত হন। ঘটনার পরপরই ফেরির ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আব্দুর রহমান ও সুকানি সাইফুল ইসলামকে বরখাস্ত করে বিআইডব্লিউটিসি।

ঘটনা তদন্তে ওই দিনই চার সদস্যের তদন্ত দল গঠন করে বিআইডব্লিউটিসি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে ঘটনায় আব্দুর রহমান খান ও সাইফুল ইসলামের দায়িত্বহীনতা রয়েছে।

ফেরি বা অন্য কোনো জলযানের সংঘর্ষ থেকে নিরাপদে রাখতে পদ্মা সেতুর পিয়ারগুলো রাবার দিয়ে মোড়ানো, ঘাট স্থানাস্তর ও স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে সক্ষম ফেরি চলানোর পরামর্শও দেয় ওই তদন্ত দল।