নারায়ণগঞ্জে বন্ধ কারখানার বকেয়া: বিক্ষোভে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ

নারায়ণগঞ্জে আদমজী ইপিজেডে বন্ধ ঘোষিত এক কারখানার বকেয়া সার্ভিস বেনিফিটের দাবিতে বিক্ষোভকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ‘কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছে’।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2021, 01:41 PM
Updated : 12 June 2021, 01:41 PM

শনিবার সকাল ৯টায় সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের কুনতুং অ্যাপারেলসের (ফ্যাশন সিটি) চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাইল সড়কে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ‘শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল’ নিক্ষেপ করে তাদের সরিয়ে দিলে দুপুরের পর ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

নারায়ণগঞ্জের ‘ক’ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে এবং ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে।

“পুলিশ ১২ রাউন্ড শর্টগান গুলি ছোড়ে এবং ১১টি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।”

তবে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে মালিকপক্ষ ‘কিছুই জানায়নি’ বলেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী কমিশনার রেজা গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, শ্রমিকদের অভিযোগ মালিকপক্ষ তাদেরকে বারবার সময় দিয়েও বকেয়া পরিশোধ করছে না। অবরোধকালে শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে মালিকপক্ষের সাথে কথা বলার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি।

গত বছরের ডিসেম্বরে আদমজী ইপিজেডের ওই পোশাক কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয় জানিয়ে শিল্প পুলিশ-৪ পরিদর্শক (গোয়েন্দা) শেখ বশির আহমেদ বলেন, “শ্রমিকদের সার্ভিস বেনিফিট ৩৫ শতাংশ পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি ৬৫ শতাংশ সার্ভিস বেনিফিট পাওনা রয়েছে।

“সার্ভিস বেনিফিটের ভেতর ‘আনরিস্ক, জিরো ফান্ড এবং নোটিশ পে’ বকেয়া রয়েছে। বেপজা কর্তৃপক্ষ তাদের পাওনা পরিশোধে উদ্যোগ নেবে।”

এদিকে শ্রমিকরা জানান, বকেয়া পরিশোধে মালিকপক্ষের দেওয়া সময় অনুযায়ী শনিবার সকাল ৯টায় দুই শতাধিক শ্রমিক আদমজী ইপিজেডের প্রধান ফটকের সামনে শিমরাইল-আদমজী ইপিজেড-নারায়ণগঞ্জ সড়কে জড়ো হন। কিন্তু তাদের পাওনা পরিশোধের বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় শ্রমিকরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। এরপর বিক্ষুব্ধরা শিমরাইল-আদমজী ইপিজেড-নারায়ণগঞ্জ সড়কের ইপিজেডের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।

পোশাক শ্রমিক রিনা আক্তার জানান, ওই কারখানায় ছয় বছর কাজ করেছেন তিনি। কর্তৃপক্ষের কাছে সার্ভিস বেনিফিট হিসেবে তার পাওনা ‘প্রায় দুই লাখ টাকা’।

তানিয়া নামে অপর শ্রমিক জানান, নয় বছর কাজ করে তারও ‘দুই লাখ টাকার বেশি সার্ভিস বেনিফিট’ টাকা জমা হয়েছে।

“কিন্তু মালিকপক্ষ দেই দিচ্ছি করে টালবাহানা করছে।”

এ বিষয়ে বেপজার জিএম আহসান কবির জানান, কারখানা বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে ফ্যাশন সিটির মালিকপক্ষ। তবে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে কোনো সময় বা তারিখ দেওয়া হয়নি।