গত ২৪ ঘণ্টায় দুই জন মারা গেছে; নতুন সংক্রমিত হয়েছে আরও ১০৮ জনের দেহে।
এ নিয়ে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১২ হাজার ৪৭০। সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি সিটি করপোরেশন ও সদর এলাকায়।
এদিকে, সংক্রমণ বাড়লেও লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে লোকজনের মাঝে ঢিলেঢালা ভাব দেখা যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব না মেনে এবং মাস্ক ছাড়া লোকজন বাজার ও পাড়া মহল্লায় চলাফেরা করছে।
আর চলতি বছরের মার্চের ৪ তারিখ থেকে ২২ এপ্রিল মারা গেছে আরও ৪৯ জন; আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৯২ জন; নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৩ হাজার ৮৮ জনের।
জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু ‘আশঙ্কাজনক’ হারে বাড়ছে। সিটি ও সদর এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। গত বছরের চেয়ে পরিস্থিতি বিপদজনক। লকডাউন কড়াকড়িভাবে পালন করতে হবে। লোকজনের ভয়ভীতি, আতঙ্ক নেই। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলা শিল্প অধ্যুষিত ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে শিল্প কারখানায় কয়েক লাখ শ্রমিক কাজ করে। গত বছর সংক্রমণে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। নতুন করে আবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।
সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারিভাবে লকডাউন দেওয়া হলেও লোকজন স্বাস্থ্য সচেতনতায় উদাসীন। শহরের পাইকারি কাঁচা বাজার দ্বিগু বাবুর বাজারে লোকজন গাদাগাদি করে কেনাকাটা করছে।
ক্রেতা দেওয়ান আরিফ হোসেন বলেন, “শুধু লকডাউন ঘোষণা দিলেই হবে না। যেসব জায়গায় লোকজনের ভিড় সৃষ্টি হয় সেসব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিত দূরত্বের বৃত্ত তৈরি করে দেওয়া হলে গাদাগাদি অনেক ক্ষেত্রেই এড়ানো সম্ভব।”
এদিকে, জেলার বিভিন্ন এলাকার পাড়া মহল্লায় লোকজন স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলাফেরা করছে। লোকজন দোকানপাট খোলা রাখছে, আড্ডাসহ ভিড় করছে স্থানীয় বাজার ও চা দোকানগুলোতে। এছাড়া পোশাক কারখানা চালু থাকায় কারখানার ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও পথে গাদাগাদি করে শ্রমিকেরা আসা-যাওয়া করছে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমিত তিন রোগীর দুজন ছিলেন নারায়ণগঞ্জে। ৩০ মার্চ করোনা সংক্রমিত হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়। গত ৭ এপ্রিল সংক্রমণের জন্য নারায়ণগঞ্জকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল আইইডিসিআর।
দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষদের প্রণোদনা দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে লকডাউন নিশ্চিত করার জন্য ১০ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ কাজ করছে। জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠনগুলো স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য কাজ করছে।”
তিনি বলেন, হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো ও অক্সিজেন মওজুদ বাড়ানো হয়েছে। আক্রান্তদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে।