ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর ঘিরে গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত চালানো তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জ্বালিয়ে দেওয়া রেল স্টেশন পরিদর্শনে এসে সোমবার তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মন্ত্রী সুজন বলেন, “আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেখেছি পাকহানাদার বাহিনী, যারা বলেছিল আমরা মাটি চাই মানুষ চাই না, তারা জ্বালাও-পোড়াও করে গ্রামের পর গ্রাম ও এভাবে রেল স্টেশন পুড়িয়েছিল।
“তবে এরা কোন শক্তি, এরা কারা? আমি মনে করি, সে শক্তি এখনও সক্রিয় আছে। তারা ২০১৩/১৪ সালেও এভাবে বাস-ট্রেনে আগুন দিয়েছে, স্টেশনে আগুন দিয়েছে।”
এই শক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়াও আহ্বান জানান মন্ত্রী সুজন।
এছাড়া আর যারা এদের সঙ্গে জড়িত সরকার তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন মন্ত্রী।
নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের আরও বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২১ বছর। প্রধানমন্ত্রীর উপর হামলার মামলা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতেও আমাদের সময় লেগেছে। সুতরাং তাদের বিচার অবশ্যই হবে।”
তিনি বলেন, একই শক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সক্রিয় আছে। এখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাইরের লোক আসছে কিনা তাও তদন্ত করে বের করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভেতরের লোকও যদি থেকে থাকে তাও তদন্ত করে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, “সবচেয়ে বড় কথা- এখন যদি লকডাউন না থাকত, ট্রেন চলাচল করত, তাহলেও কিন্তু আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন থামাতে পারতাম না। এতে এই এলাকার মানুষের যে ভোগান্তি হতো, তা কী দিয়ে পূরণ করব?”
ঢাকা-চট্টগ্রামের পর গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সেই গুরুত্ব বিবেচনা করে দ্রুত কাজ করে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হবে বলে মন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন।
মন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার প্রমুখ।
নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর ঘিরে ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় মাদ্রাসা ছাত্ররা।
২৬ মার্চ বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাক বাংলো, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরসহ ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তারা। এই ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছে।