রাবি উপাচার্য ভবনের তালা খুললেও অবস্থান প্রশাসন ভবনে

রাতভর অবরুদ্ধ রাখার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনের তালা খুলে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2021, 08:04 AM
Updated : 12 Jan 2021, 08:04 AM

তবে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রশাসন ভবনের গেটে অবস্থান নিয়েছেন এ ছাত্র সংগঠনের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মীরা।

সোমবার রাত ৯টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত উপাচার্য বাসভবন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সেখানে উপাচার্যসহ প্রশাসনের কয়েকজন ব্যক্তি আটকা পড়েছিলেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় চলবে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৭৩-এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী। প্রায় এক মাস আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী তিনি এগুলো মানতে বাধ্য নন কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি উপাচার্য সেগুলো মেনে চলছেন। যা অধ্যাদেশের লঙ্ঘন।

“আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় যাতে মর্যাদা ফিরে পায়। উপাচার্য যদি কোনো অনৈতিক কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেন তবে শিক্ষামন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ব্যক্তির অপরাধে প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা নষ্ট হতে পারে না।“

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “উপাচার্য যদি দুর্নীতি করে থাকেন, তাহলে তাকে কেন অপসারণ করা হচ্ছে না? অপসারণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করে কেন রাখা হয়েছে?”

তিনি আরও বলেন, তারা উপাচার্যের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান, কেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। যদি উপাচার্য সে ব্যাখ্যা না দিতে পারে, তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে তিনি সে ব্যাখ্যা দিক।

এদিকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য, প্রক্টর এবং ছাত্রলীগের ছয়জন প্রতিনিধি নিয়ে আলোচনায় বসেছে প্রশাসন। দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রশাসন ভবনে আলোচনা চলছিল জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যা সমাধান হবে। তবে ওই ছয় জন বাদে বাকি নেতাকর্মীরা প্রশাসন গেটে তালা লাগিয়ে অবস্থান করছেন।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) দিয়েছেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশ।

পরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অভিযোগগুলো তদন্তে ইউজিসি একটি কমিটি গঠন করে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটি উভয়পক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনে উন্মুক্ত শুনানির আয়োজন করে কিন্তু তাতে উপাচার্য উপস্থিত হননি।

এ তদন্ত শেষে গত ২১ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ইউজিসি। পরে গত ১০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়োগ স্থগিত করে দেয়।

এদিকে, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আখতার ফারুক স্যার মারা যাওয়ায় মানবিক দিক বিবেচনা করে উপাচার্য ভবনের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে।