অনেকদিন এত মানুষ থাকলে এবং তারা কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি মিয়ানমারের জন্যও ক্ষতিকর বলে মনে করেন তিনি।
সোমবার রাঙামাটিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা সমস্যা কেবল আমাদের একক সমস্যা না, এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা। আমরা এটা বিশ্বাস করি, স্থায়ী সমাধান হিসেবে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাবে। তারা ফিরে যাবে বলেই আমরা এখনও আশাবাদী।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, “কুতুপালং একটি পাহাড়ি এলাকা, আমরা পাহাড় ধসসহ নানা ঝুঁকি এড়াতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের।”
সেখানে ২২-২৩ হাজার পরিবারকে স্থানান্তর করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে ভাসানচরে যেমনি তারা শান্তিতে থাকবে, এখানকার রোহিঙ্গারাও আগে থেকে ভালো থাকবে।
“কিছু ইকোনমিক এক্টিভিটিতে আমরা তাদের নিয়োগ করব, তাতে তাদের সন্ত্রাসী হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রথমে আমরা ১৬৪২ জনকে ভাসানচরে নিয়ে গেছি। তবে অনেক দীর্ঘায়িত হয়েছে। কারণ আর্ন্তজাতিক সংস্থাগুলো সেখানে যেতে রাজি নয়। তারা এটাকে ইস্যু করে; কিন্তু আমরা তো মানুষের মঙ্গল চাই। এখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি তাদের মঙ্গলের জন্য।”
ভাসানচরে এখন সপ্তাহে শনিবার ও বুধবার দুটি স্টিমার যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রথমে যারা ভাসানচর গেছে, তারাই এখন তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সেখানে যেতে বলছে।
“আমরা ভেবেছি ৭-৮শ হবে; পরে দেখি প্রায় ১৮ শয়ের অধিক রোহিঙ্গা। পরে তাদেরও আয়োজন করে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে।”
“দুনিয়ার সকলের দায়-দায়িত্ব নির্যাতিত লোকদের সাহায্য করা। আপনারা বড় বড়ো বড়ো বক্তব্য দেবেন; কিন্তু আপনারা কেন এসে তাদের নিলেন না? আমরা এত লোককে আশ্রয় দিয়েছি। আমরা রোহিঙ্গাদের ভালো অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছি। ভাসানচরে তাদের স্থানান্তর করেছি, এটি সারা বিশ্বে মডেল। দুনিয়ার কোথাও উদ্বাস্তুদের এভাবে শান্তিতে রেখেছে?”
করোনাভাইরাসের টিকায় ‘ভারতের ওপর আস্থা’
এই বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের ভারত সরকার বারবার অঙ্গীকার করেছে-তারা যখন ভ্যাকসিন ব্যবহার করবেন, আমরা একই সময়ে ভ্যাকসিন ব্যবহার করব। এটি ভারত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই জানানো হয়েছে। আমরা ভারতকে বিশ্বাস করি।”
ভারতের সঙ্গে বারবার আলাপ হয়েছে এবং তখন তারা এই নিশ্চয়তা দিয়েছেন বলে জানান মোমেন।
এর আগে স্টেডিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব-২০২১’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, সেনাবাহিনীর রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. ইফতেকুর রহমান, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ, জেলা পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন।
বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব-২০২১-এর আয়োজকরা জানান, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার উৎসব।
এই উৎসবে পর্বতারোহন, নৌ-বিহার, কায়াকিং, হাইকিং ও ট্রেইল রান, টিম বিল্ডিং, ট্রেজার হান্ট, ট্রেকিং, ক্যানিওনিং, ট্রি ট্রেইল, রোপ কোর্স, জিপলাইন, রেপলিং, দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন ও কেভ ডিসকভারি ইভেন্টসমূহে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুঃসাহসিক অভিযাত্রায় এক অন্যরকম ক্রীড়া অ্যাডভেঞ্চারের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে অ্যাডভেঞ্চাররা।