‘যৌতুক’: বরগুনায় গৃহবধূকে খুন্তির ছ্যাকা

বরগুনায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে খুন্তির ছ্যাকা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2020, 04:35 PM
Updated : 11 Sept 2020, 04:35 PM

বরগুনার তালতলী উপজেলার বড় আমখোলা গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতের এ ঘটনায় আহত নারীকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত মার্জিয়া (৩০) তালতলী উপজেলার বড় আমখোলা গ্রামে মানিক খানের স্ত্রী। মানিক বরগুনা সদর উপজেলার ধুপতি গ্রামের আনোয়ার খানের ছেলে। আর মার্জিয়ার বাবা আব্দুল খালেক খাঁন উপজেলার বড় আমখোলা গ্রামের বাসিন্দা।

২০০৯ সালে মার্জিয়া ও মানিকের বিয়ে হয়। তাদের দুইটি মেয়ে রয়েছে।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র বলেন, মার্জিয়ার শরীরের ১২টি স্থানে আগুনে ঝলসে যাওয়ার মতো চিহ্ন রয়েছে।

তিনি জানান, ওই নারীর মাথার পেছনের চুল কাটা রয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সূর্য্য ভানু বলেন, রাতে মানিক খানের বাড়িতে চিৎকার শুনে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি মার্জিয়াকে তার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে মারধর করছে। তারা মার্জিয়ার শরীরে গরম খুন্তির ছ্যাকা দিচ্ছে।

“আমি যাওয়ার পরে মার্জিয়াকে ছেড়ে দেয় তারা।”

আহত মার্জিয়া জানান, বিয়ের পর তার বাবার দেওয়া দুই লাখ টাকা দিয়ে তার বাবার বাড়ির পাশে বাড়ি বানায়।

“গত তিন বছর আগে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে ফেলে রেখে ঢাকা চলে যায় (মানিক খান)। আমার কোনো খোঁজ খবর নেয়নি। গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে এসে আমার বাবার বাড়িতে যায়। আমাকে কৌশলে ওই রাতে তাদের বাড়ি নিয়ে যায় এবং ব্যবসার কথা বলে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে।

“আমি এ টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে মারধর করে শরীরে গরম খুন্তির ছ্যাকা দিয়েছে। মাথার চুল কেটে দিয়েছে।”

তার চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে আসায় প্রাণে বেঁচে যান বলেন তিনি।

মার্জিয়ার বাবা আবদুল খালেক খান জানান, বিয়ের পর থেকে তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছে জামাতা মানিক। গত তিন বছর ধরে তার মেয়ের কোনো খোঁজ নেয়নি মানিক।

“বৃহস্পতিবার রাতে আমার মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে জামাতা মানিক, তার বোন জাকিয়া ও মা আলেয়া মিলে আমার মেয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। গরম খুন্তির ছ্যাকা দিয়েছে। প্রতিবেশীরা না হলে ওরা আমার মেয়েকে মেরেই ফেলত।”

তবে যৌতুক চাওয়ার কথা অস্বীকার করে মানিক খাঁন বলেন, “সামান্য ঝগড়াঝাটি হয়েছে, মারধর কিংবা কোনো খুন্তির ছ্যাকা দেইনি।”

তালতলী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।