সাঈদীর মামলার অন্যতম সাক্ষী বাবুলের মৃত্যু

যুদ্ধাপরাধ মামলায় আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম সাক্ষী পিরোজপুরের আব্দুল হালিম খলিফা ওরফে বাবুল পণ্ডিত মারা গেছেন।

পিরোজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2020, 01:32 PM
Updated : 15 May 2020, 01:59 PM

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের নলবুনিয়া গ্রামে নিজের বাড়িতে ৫৫ বছর বয়সী বাবুলের মৃত্যু হয় বলে তার ভাই সালাম বাহাদুর জানান।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে বাবুল অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, বাবুলের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

“যুদ্ধাপরাধ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হওয়ায় হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে তার চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। তার নিরাপত্তার জন্য নিয়মিত পুলিশ ফোর্স থাকত। এ কারণে রাখা হয়েছিল প্রিজন ওয়ার্ডে। পুলিশি নিরাপত্তার কারণে তাকে প্রাইভেট হাসপাতালেও ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গত বুধবার তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।”

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাড়িতে বাবুলের মৃত্যু হলে শুক্রবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় বলে সালাম বাহাদুর জানান।

তিনি বলেন, “পুলিশি পাহারার কারণে আমার ভাইয়ের সাধারণ জীবনযাপন ব্যাহত হয়েছে। এমনকি এই নিরাপত্তার কারণে তার উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারি নাই।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইন্দুরকানি থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাক্ষী হিসেবে উনাকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশনা ছিল, সেটা আমরা পুরোপুরি দিয়েছি। এখন খুলনায় যদি চিকিৎসা না পেয়ে থাকেন, সেটা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।

“আমরা তাকে নিয়ে যাওয়া, নিয়ে আসা সবক্ষেত্রেই নিরাপত্তা দিয়েছি। এমনকি মারা যাওয়ার পর জানাজা দাফনের সময়ও ছিলাম।”    

এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে খুন-ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ২০১২ সালে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে আপিল বিভাগের রায়ে তার সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার আরকে সাক্ষী মোস্তফা হাওলাদারকে ২০১৩ সালে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার পর সাক্ষীদের বাড়িতে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করে কর্তৃপক্ষ।

আব্দুল হালিম খলিফা ওরফে বাবুল পণ্ডিত বৌডুবি বাজারে একটি ওষুধের দোকান চালাতেন। স্থানীয় রাজলক্ষ্মী স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। বাবুল স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।