তাদের মধ্যে দুজন স্বামী-স্ত্রী। বাকি দুজন হলে তাদের একজনের বোন এবং বোনের স্বামী। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার কাওকান্দি গ্রামে তাদের বাড়ি।
গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজারের শিরির চালা এলাকায় দুটি বাসায় ভাড়া থেকে স্থানীয় দুটি পোশাক কারখানায় তারা চাকরি করেন।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মির্জা রিয়াদ হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানান, লকডাউনের মধ্যে কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে গত ১৭ এপ্রিল ওই চারজন কাওকান্দির বাড়িতে ফেরেন।
গাজীপুরে কেরোনাভাইরাসের প্রকোপ বেশি বলে তাদের আসার খবর পেয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সন্দেহ হওয়ায় ২২ এপ্রিল তাদের নমুনা সংগ্রহ করে প্রথমে সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়।
রিয়াদ হাসান বলেন, “দুই জায়গাতেই পরীক্ষায় তাদের সবার করোনাভাইরাস পজিটিভ হয়েছে। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার ফলাফল ৫ মে। পরে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়।”
কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ওই চারজন গাজীপুরে ফিরে গেছেন কারখানার কাজে যোগ দেওয়ার জন্য।
ওই পরিবারের একজন পুরুষ সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন আমাদের নমুনা নিয়ে গিয়েছিল পরীক্ষা করার জন্য। কিন্তু আমাদের কারও কোনো শরীরিক সমস্যা নেই। আর পরীক্ষার ফলাফলও আমারা পাইনি। তাই গাজীপুরে এসে গত ৩ তারিখে কারখানায় যোগ দিয়েছি।”
তিনি বলেন, ৫ মে কাজ সেরে বাসায় ফেরার পর পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা রাতে ফোন করে পরীক্ষার ফলাফল জানান এবং বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলেন।
জয়দেবপুর থানার ওসি জাবেদুল ইসলাম জানান, ৫ মে রাত ৯টার দিকে তাহিরপুর থানার ওসি ফোন করে ওই চারজনের খবর জানান।
“পরে রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে আমরা বিষয়টি জানাই। তারা যে দুই বাড়িতে ভাড়া থাকেন, সেই দুই বাড়ির তিনটি কক্ষ অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়।”
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, ওই চারজন কারখানায় চাকরি করতে গিয়ে কিংবা ভাড়া বাসায় থাকাকালে যাদের সংস্পর্শে গেছেন, তাদের নমুনাও সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে।
“কর্মস্থলে তারা যে লাইনে কাজ করেছেন, সেখানে সহকর্মীদের নমুনায় সংক্রমণ পাওয়া গেলে তাদেরও আইসোলেশনে পাঠানো হবে। সংক্রমণ বেশি হলে কারখানাও অবরুদ্ধ করা হবে।”