জামিনে মাদারীপুরে বাড়ি ফিরে খুন হলেন যুবক

মাদারীপুরে জামিনে বেরিয়ে আসা এক হত্যা মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

মাদারীপুর প্র‌তি‌নি‌ধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2020, 06:26 PM
Updated : 19 April 2020, 06:26 PM

শনিবার গভীর রাতে ঢাকার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজৈরের সেই কাঠমিস্ত্রি যুবক।

নিহত প্রসেন বসু (৩১) রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের মৃধাবাড়ি গ্রামের সতীশ বসুর ছেলে।

রাজৈর থানার ওসি খোন্দকার শওকত জাহান বলেন, “দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর থেকে আমরা ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রেখেছি।

প্রসেনের মৃত্যুর খবর শুনে আসামিরা এলাকাছাড়া জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৪ জানুয়ারি মৃধাবাড়ি গ্রামে জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্থানীয় ওয়ার্ডের সদস্য যুধিষ্ঠির বসু নিহত হন। এ ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার হন প্রসেনসহ বেশ কয়েকজন। আসামিদের মধ্যে কয়েকজন ‘প্রায় ছয় মাস আগে জামিনে মুক্তি পান।’

প্রসেনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার গ্রামের বাড়িতে আহাজারি করছে স্বজনেরা।

প্রসেন বসুর স্ত্রী শিল্পী বসু বলেন, “আমার স্বামী বিনা অপরাধে জেলে ছিল। জামিনে বের হয়ে বাড়িতে এসেছিল। এর পরপরই ওরা আমার স্বামীকে ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

“অবশেষে মরেই গেল আমার স্বামী। আমার ছোট মেয়েটা শুধু বাবা বাবা করছে? ওরে নিয়ে এখন আমি কীভাবে বাঁচব?”

জামিন হলেও তারা এলাকায় আসেননি। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কোথাও আশ্রয় না পেয়ে গত বুধবার এলাকায় ফিরতে বাধ্য হন বলে জানান তার স্বজনরা।

গত ১৫ এপ্রিল দুপুরে হামলা করে জানিয়ে নিহত প্রসেন বসুর কাকা সুখদেব বসু জানান, বাড়ি ফেরার কথা জানতে পেরে প্রতিপক্ষ ‘নিরোধ বসুর নেতৃত্বে একদল লোক’ জামিনে পাওয়া আসামিদের ওপর হামলা চালায়।

এ হামলায় প্রসেন বসু (৩১), মিহির বসু (২১), সতীশ বসু (৬৪) ও সজু বসুসহ (১৯) কয়েকজন গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাদের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে প্রসেন ও মিহিরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে প্রসেনকে ঢাকার শ্যামলীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান সুখদেব।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে নিরোধ বসু বলেন, “আমাদের ফাঁসাতে ওরা নিজেরা মারামারি করেছে। এখন মারা গেছে। তাই আমাদের দিকে অভিযোগ দিচ্ছে। আমাদের কোনো লোক সেদিন প্রসেনদের ওপর হামলা চালায়নি।”

নিহত প্রসেন বসুর কাকা সুখদেব বসু বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এতে আসামি হিসেবে নিরোধ বসুসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ কর করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৭/৮ জনকে।