রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদ

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিচার দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির একদল শিক্ষার্থী।

ফজলে এলাহী রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2020, 05:00 PM
Updated : 9 Feb 2020, 05:25 PM

এই দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে তারা রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সমানে মানববন্ধন করেছেন। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসে ওঠা নিয়ে দুই শিক্ষার্থীর কথাকাটাকাটির জেরে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চার ছাত্রকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ ওঠে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন হামলার শিকার এক ছাত্র।

একই ঘটনায় হামলার শিকার ওই চার ছাত্রের বিরুদ্ধেও থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ করেছেন ওই অভিযোগে থাকা একজন।

কোতোয়ালি থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি বলেন, দুটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তদন্ত করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেলে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র আকিব মাহমুদ হাসান, লাল সাং, আহাম্মেদ রেজা আরিফ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র রিয়াদ তালুকদার, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মিলিন্দ চাকমা প্রমুখ।

লাল সাং তার বক্তব্যে বলেন, “বহিরাগত ও ছাত্রলীগ নামধারীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। তারা ক্যাম্পাসের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের ব্যাঘাত ঘটাতে চায়। এভাবে হামলা হলে কিসের ভরসায় সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়তে আসবে?”

মিলিন্দ চাকমা বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টির মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসনের ও স্থানীয় এলাকাবাসীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জোর দাবি এবং এই হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

আকিব মাহমুদ হাসান দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং এই হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জুয়েল শিকদার বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি। তবে শিক্ষার্থীরা আমার কাছে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আইনগত ব্যবস্থা যা নিতে হয় অবশ্যই তা নেওয়া হবে।”

ওসি মীর জাহিদুল হক রনি বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসে ওঠা নিয়ে দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে কথাকাটাকাটির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় চার ছাত্রকে পিটিয়ে জখম করেছে একদল যুবক, যাদের ছাত্রলীগ কর্মী বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় একটি মামলা করেন মেহেদী হাসান নামের এক শিক্ষার্থী।

“মেহেদী হাসান তার অভিযোগে বলেছেন, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল জব্বার সুজনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত জুবায়ের হোসেন জুয়েল, মিরাজুল হাসান সাইমন, মো. রুবেল হোসেন, মো. পারভেজ, মো. দিদার, মো. ইমন, মীর শাকিল, মো. সোহেল তাদের মারধর করে আহত করেছেন।”

মেহেদীর বন্ধু আকিব মাহমুদ হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আহতদের মধ্যে আকিব, লালসাং ও রিয়াদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মেহেদীকে ওইদিনই রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।

রাঙামাটি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শওকত আকবর বলেন, গত বৃহস্পতিবার মেহেদী হাসান নামের এক ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। রোববার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ওসি আরও জানান, অপরদিকে মেহেদী, আকিব, লালসাং ও রিয়াদের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন মিরাজুল হাসান সাইমন, যার নাম মেহেদীর অভিযোগে রয়েছে।   

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল জব্বার সুজন বলেন, তিনি এই হামলার সঙ্গে জড়িত নন। অনুসারী বলে কিছু নেই।

তবে হামলায় যাদের নামে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রুবেল হোসন ও মীর শাকিল ছাত্রলীগের নেতা বলে তিনি জানান।