মুক্তিযোদ্ধার ‘জমি দখল করে’ আনসারের স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

পাবনায় এক মুক্তিযোদ্ধার পরিবারিক জমি দখল করে আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।

সৈকত আফরোজ আসাদপাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2019, 07:47 AM
Updated : 8 Dec 2019, 07:47 AM

সরেজমিনে দেখা গেছে, জমি ফিরে পেতে গত ১৪ মে জেলা যুগ্ম জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন আহমদ সরদার। সেই মামলা এখনো নিষ্পত্তি না হলেও এরই মাঝে সেখানে সীমানা প্রাচীর দিয়ে একতলা ভবন নির্মাণ করেছে আনসার কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা আহমদ সরদারের দাবি, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার পারিবারিক জমিতে স্থাপনা নির্মাণে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা অমান্য করে কাজ করেছে আনসার ও ভিডিপি কর্তৃপক্ষ।

তবে এ জমি নিয়ে কোনো অভিযোগ পাননি বলে দাবি করেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পাবনা জেলা কমান্ড্যান্ট শফিুকল আলম।

তিনি বলেন, “মানিকনগরের জমি নিয়ে কখনোই কেউ অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসেনি।”

জমিটি ‘আনসার মাঠ’ নামে পরিচিত উল্লেখ করে তিনি জানান, আনসার ভিডিপির নামেই জমিটি রেকর্ড করা রয়েছে।

জমিটি আনসার মাঠ হিসেবে পরিচিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে আহমদ সরদার বলেন, ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তার বাবার অনুমতি নিয়েই এ জমিতে অস্থায়ী প্রশিক্ষণ ক্যাম্প করে আনসার।

“মুক্তিযুদ্ধের পরেও মাঝে মাঝে তারা এ জমি প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করেছে। তবে কোনো আর্থিক চুক্তি ছিল না।”

আহমদ জানান, ১৯৫১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তার বাবা মনছের সরদার হরেন্দ্রনাথ সরকার নামের একজনের কাছ থেকে ঈশ্বরদী উপজেলার মানিকনগর গ্রামে জয়নগর মৌজায় ২৬২৫ দাগের ২.৪৯ একর জমি কেনেন। যার দলিল নম্বর ৪৯৮৬।

“জমি ক্রয় করার পর তিনি এই জমিতে চাষাবাদ করতেন।”

তার বাবা মারা যাবার পর  এবং মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় জমির খাজনা পরিশোধে অনিয়ম হয়।  এ সময় আনসার ও ভিডিপি কর্তৃপক্ষ তাদের নামে রেকর্ড করে নেয় বলে অভিযোগ করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

পরে জমির খাজনা দিতে গিয়ে জমিটি আনসার ও ভিডিপির নামে রেকর্ড হয়েছে বলে জানতে পারেন।

আনসারের স্থাপনা নির্মাণ প্রসঙ্গে আহমদ সরদারের ভাতিজা শিমুল সরদার বলেন, “আমাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে আনসার কর্তৃপক্ষ স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে।

“তখন আমরা গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে এ নির্মাণ কাজের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করি। আদালত তা গ্রহণ করে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

“তবে স্থাপনা নির্মাণে আদালতের নিষেধাজ্ঞারও তোয়াক্কা করেনি আনসার কর্তৃপক্ষ।”

মামলা তুলে নিতে হুমকিও পেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আহমদ সরদারের জমির বিষয়টি জেনেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জমির মালিকানার আহমদ সরদারের আইনগত প্রমান থাকলে বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তাও।