অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০০ আসামি, বোরহানউদ্দিন থমথমে

ভোলার বোরহানউদ্দিনে হিন্দু তরুণের ফেইসবুক আইডি হ্যাক করে ‘অবমাননাকর’ বক্তব্য ছড়ানোর পর সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ হাজার লোককে আসামি করে মামলা হয়েছে।

ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2019, 06:30 AM
Updated : 21 Oct 2019, 07:12 AM

বোরহানউদ্দিন উপজেলার পাশাপাশি পুরো জেলাতেই থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সভা সমাবেশ বা মিছিল করা যাবে না।    

চারজন নিহতের প্রতিবাদে ‘মুসলিম ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে সোমবার যে সমাবেশ ডাকা হয়েছিল, অনুমতি না পাওয়ায় তা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আয়োজকদের অন্যতম নেতা মাওলানা মিজানুর রহমান। তবে ভোলা প্রেসক্লাবে তাদের সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে।

রোববার দুপুরে ওই সংঘর্ষের পর আশপাশের জেলা থেকে বাড়তি পুলিশ আনা হয়েছে দ্বীপজেলা ভোলায়। বোরহানউদ্দিনে মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। 

বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভ নামের এক যুবক শুক্রবার রাতে বোরহানউদ্দিন থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। সেখানে তিনি তার ফেইসবুক আইডি হ্যাকারের কবলে পড়ার কথা জানান।

শুভর মেসেঞ্জারে ‘নবীকে নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য’ ছড়িয়ে সেই ‘স্ক্রিনশট’ ব্যবহার করে গত শুক্রবার থেকে বোরহানউদ্দিনে উত্তেজেনা সৃষ্টি করা হয়।

এরপর শুভর বিচারের দাবিতে রোববার বোরহানউদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে ‘মুসলিম তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

রোববার বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে দফায় দফায় সংঘর্ষে চারজন নিহত হন, আহত হন ১০ পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক।

সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের দিকে গুলিও ছোড়া হয়; তাতে একজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন।সংঘর্ষে যে চারজন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুজনের মাথা ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে থেঁতলানো ছিল বলে চিকিৎসকের বরাতে জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।

বোরহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, বিশৃঙ্খলার অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় চার থেকে পাঁচ হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে সেখানে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক জানান, কেউ যেন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সভা সমাবেশ বা মিছিল না করে, সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

বোরহারউদ্দিনের পাশাপাশি ভোলা জেলা শহরে রোববার থেকেই পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। পাশের জেলা থেকে অতিরিক্ত দুইশর বেশি পুলিশকে ভোলায় আনা হয়েছে বলে ভোলা মডেল থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানিয়েছেন। 

আর বোরহানউদ্দিনে পুলিশ ও বিজেবির পাশাপাশি কোস্টগার্ড সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন বলে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানিয়েছেন।