পশ্চিম বঙ্গের কলকাতা, চব্বিশ পরগনা, দারজিলিংসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা এই ভারতীয়রা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, এবার তারা বাংলাদেশে পুজো করবেন বলে এসেছেন।
শনিবার সকালে চেকপোস্ট পার হয়ে বরিশাল রওনা হওয়ার আগে বেনাপোলের 'রাজা বাদশা মানি চেঞ্জার' কার্যালয়ে এসেছিলেন চব্বিশ পরগনার গোপালনগরের বীণা রানী চক্রবর্তী ও তার বোন রিধি রানী।
বীণা বলেন, “এপারে আসলাম বাংলাদেশি আত্মীয়-স্বজনদের সাথে পূজার উৎসব ভাগাভাগি করতে। পুজোটা এবার বাংলাদেশেই করব। একই সাথে বাংলাদেশের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার ইচ্ছাও রয়েছে।”
বীণার ছোট বোন রিধি কখনও বাংলাদেশে আসেননি বলে জানালেন।
তিনি বলেন, “এবারই প্রথম বাংলাদেশে আসলাম। খুব ভাল লাগছে। পুজোর কটা দিন খুব মজা করব। বাংলাদেশের হিন্দু তীর্থস্থানগুলো দেখব।”
চব্বিশ পরগনার বামুনগাছি এলাকার সুখরঞ্জন ঘোষ, স্ত্রী স্বপনা ঘোষ ও তাদের একমাত্র সন্তান দীপংকর ঘোষ বাংলাদেশে এসেছেন শনিবারই।
সুখরঞ্জন ঘোষ বলেন, “পূজা করতে পিরোজপুর শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছি। পূজার সময় কখনও আসতে পারেনি। এবার টানা ১০ দিনের ছুটি পেয়েছি। তাই শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের সাথে পূজাটা খুব ভাল কাটবে।”
কাকলী বলেন, “সরকারি চাকরি করি, তাই ঘুরে বেড়ানোর সময় পাই না। পরিবারে সময় দিতে পারি না। এবার পূজায় লম্বা ছুটি থাকায় বাগেরহাট বেড়াতে যাচ্ছি। সেখানে কিছু আত্মীয় আছেন। তাদের সঙ্গে দেখা করব।
“বাগেরহাটের শিকদার বাড়িতে ৮০১টি প্রতিমা নিয়ে গড়া বিশাল দুর্গাপূজার আয়োজন দেখার ইচ্ছা রয়েছে।”
কলকাতার ময়ুরী ও হরিপদ যাবেন ঢাকার শ্যামবাজারে আত্মীয় বাড়িতে।
হরিপদ বললেন, “শ্যামবাজারের গোকুল চন্দ্র স্টেটের মন্দিরের নাম শুনেছি। দেখা হয়নি। ওখানে যাব। পুজো দেব। আত্মীয়-স্বজনের সাথে এবার পুজোটা জমিয়ে করব।”
কলকাতার বাগুইহাটির রঞ্জন দাস বলেন, “কাজের চাপে এত দিন সময় করে উঠতে পারিনি। লম্বা ছুটি পাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছি।”
দারজিলিংয়ের বারীন্দ্র বিশ্বাস সাথে নিয়ে এসেছেন স্ত্রী লতা বিশ্বাস ও ছেলে রনিকে। আর হিরণ সরকারের সঙ্গে আছেন স্ত্রী সুস্মিতা সরকার, ছেলে সঞ্জয় ও মেয়ে অর্চনা।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবার অনেক বেশিসংখ্যক ভারতীয় ছুটি কাটাতে বাংলাদেশে যাচ্ছেন।
“ভারতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে দীপাবলী বা কালীপূজা হলেও দুর্গোৎসব বাংলাদেশেই বেশি আড়ম্বরপূর্ণ হয়।”
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি মহসিন খান পাঠান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,
এবার বাংলাদেশে ভ্রমণেচ্ছুদের চাপ অন্য যে কোনো বছরের চেয়ে অনেক বেশি।
“দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতে ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসছে তারা।”
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি মহসিন খান পাঠান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দৈনিক সাধারণত একশ-শোয়াশ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসে।
“কিন্তু বুধবার এসেছে ১২৯৮ জন, বৃহস্পতিবার ৭০৭ জন, আর শুক্রবার এসেছে ১৪৬৭ জন।”