হোমিও দোকানে স্পিরিট বিক্রি: ৬ জনের মৃত্যু

নোয়াখালীর একটি হোমিও দোকান থেকে স্পিরিট কিনে পান করার পর ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।

নোয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2019, 12:06 PM
Updated : 28 Sept 2019, 01:06 PM

জেলার পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, হোমিও দোকানের মালিক ও তার ছেলেকে আটকের পর তারা স্পিরিট বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন।

এছাড়া দোকানটিতে ৬০০ বোতল ‘রেক্টিফায়েড স্পিরিট’ পেয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

আটককৃতরা হলেন জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বসুরহোট বাজারের রফিক হোমিও হলের মালিক জাহেদ উল্লা (৫৮) ও তার ছেলে মিজানুর রহমান প্রিয়ম (২৮)।

পুলিশ সুপার আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে বলেন, হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে তারা বৃহস্পতিবার রাতে অনেকের কাছে স্পিরিট বিক্রি করেন।

“বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত যে ছয়জন মারা গেছেন তারা ওই দোকান থেকে স্পিরিট কিনেছিলেন বলে আটক জাহেদ ও তার ছেলে প্রিয়ম স্বীকার করেছেন।”

একই সময় ওই দোকান থেকে স্পিরিট কিনে পান করার পর আরও অন্তত ছয়জন অসুস্থ হওয়ায় তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। তবে তাদের নাম-ধাম পাওয়া যায়নি। তাদের কোথায় ভর্তি করা হয়েছে তাও এখনও জানা যায়নি।

নিহতরা হলেন- বসুরহাট পৌরসভার বাঁশ ব্যাপারিবাড়ির এছাক মিয়ার ছেলে নূরনবী মানিক (৫২), আবদুর রহমানের ছেলে লিটন (৫০), খিরুদ মহাজনবাড়ির অনিল কুমার দের ছেলে রবি লাল (৫৫), সিরাজপুর মতলব মিয়ার বাড়ির রইসল হকের ছেলে সবুজ (৪৫), মোহাম্মদ নগর এলাকার মহিন উদ্দিন (৪০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল আজিজের ছেলে আবদুল খালেক (৬৫)।

মৃত্যুর আগে তাদের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসক মৃত্যুর কারণ বলতে পারেননি।

ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. সেলিম বলেন, “মৃত ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্বজনরা লাশ নিয়ে চলে যান। চিকিৎসক তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর কারণ খুঁজে পাননি।”

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন, খালেক, সবুজ ও মহিনের লাশ পুলিশ জানার আগেই তড়িঘড়ি দাফন করা হয়। নূরনবী, রবি ও লিটনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।

নোয়াখালী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম বলেন, ময়নাতদন্তের আগে বলার মত কোনো আলামত পাননি তারা।

এদিকে ঘটনার পর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ ওই দোকানটি সিলগালা করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, দোকানটিতে তল্লাশি চালিয়ে হোমিও ওষুধের লেবেল লাগানো ৬০০ বোতল রেক্টিফাইড স্পিরিট জব্দ করার পর দোকানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।

জাহেদের কোনো ডাক্তারি সনদ নেই বলে তিনি জানান।

এর আগেও জাহেদকে পুলিশ স্পিরিট বিক্রির অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিল। তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে আবার স্পিরিট বিক্রি শুরু করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হোমিও ডাক্তার নামধারী জাহেদ ও তার ছেলে প্রিয়ম দীর্ঘদিন ধরে মাদকসেবীদের কাছে স্পিরিটসহ বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য বিক্রি করে আসছেন।