খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. মঈনুদ্দিন খান জানান, মঙ্গলবার রাতে নিয়মিত টহলের সময় বনরক্ষীরা মৃত বাঘিনীকে ছাপড়াখালী খালের কাছ পড়ে থাকতে দেখেন। তারা মৃতদেহটি উদ্ধার করে শরণখোলা রেঞ্জ কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
পূর্ণবয়স্ক এই বাঘিনীর দৈর্ঘ্য প্রায় সাত ফুট জানিয়ে তিনি বলেন, “তার দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বাহ্যিক আঘাতের চিহ্ন না থাকায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
“সাধারণত, শিকারিররা হত্যা করলে বা অন্য কোনোভাবে হত্যা করা হলে কোনো আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা। তেমনটা নেই। এর বাইরে অনেক সময় বনের মঝে টেরিটোরিয়াল সংঘাতেও বাঘের মৃত্যু হতে পারে।”
দেহের কোথাও পচন ধরেনি জানিয়ে তিনি বলেন, “বাঘটি খুব বেশি আগে মারা যায়নি। হয়ত ওই দিনই মারা যেতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।”
প্রাণিসম্পদ বিভাগের পশু চিকিৎসা কর্মকর্তারা বুধবার ময়নাতদন্ত করেছেন বলে তিনি জানান।
খবর পেয়ে মৃত বাঘ দেখার জন্য বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মদিনুল আহসান ও সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও মাহমুদুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তারা শরণখোলা যান।
ডিএফও মদিনুল বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়াও মৃত্যুর কারণ জানতে তারা বাঘটির শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢাকায় বন বিভাগের ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠাবেন।
“ময়নাতদন্ত ও ফরেন্সিক পরীক্ষার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
মদিনুল বলেন, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সবচেয়ে বেশি ঘনত্ব শরণখোলা রেঞ্জে। এ রেঞ্জের মধ্যে আবার কটকা ও কচিখালীতে বাঘের বিচরণ সবচেয়ে বেশি।
“গোটা বিশ্বে বাঘের সংখ্য হাতেগোনা। একটি বাঘের মৃত্যু আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত দুঃখের।”
সুন্দরবন এলাকায় বাঘের গড় আয়ু ১৪ থেকে ১৬ বছর বলে তিনি জানান।