পাবনায় যৌন হয়রানির অভিযোগ করা শিক্ষিকাকে বরখাস্ত

পাবনার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজাউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করা সেই শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2019, 07:45 AM
Updated : 18 July 2019, 07:45 AM

সিরাজগঞ্জের মিরপুর উচ্চবিদ্যালয়ের এই শিক্ষিকা বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, “বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করল।

“এছাড়া অধ্যক্ষ সুজাউদ্দোলা জামিনে মুক্ত হয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন লোকজনকে দিয়ে আমাকে মোবাইল ফোনে চাপ প্রয়োগ করছেন। এসব নিয়ে আমি ও আমার পরিবার মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছি।”

এই শিক্ষিকা সিরাজগঞ্জ থেকে পাবনায় গিয়ে ওই কলেজে এমএড কোর্সের ক্লাস করেন। তিনি প্রতি বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখানে গিয়ে ছাত্রীনিবাসে রাত্রিযাপন ও শুক্রবারে ক্লাস শেষে বিকেলে বাড়ি ফেরেন। গত ১২ জুলাই রাতে অধ্যক্ষ সুজাউদ্দোলা জরুরি প্রয়োজনের কথা বলে হোস্টেলের গেস্টরুমে ডেকে নিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন এই অভিযোগে তিনি পাবনা থানায় মামলা করেছেন।

তারপর ১৬ জুলাই তাকে স্কুলের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

শিক্ষিকার অভিযোগ, “স্কুলের একটি প্রভাবশালী চক্র আমাকে অপসারণ করার ষড়যন্ত্রে করছে। তাদের উস্কানিতে কিছু শিক্ষার্থী উত্তেজিত হয়। একপর্যায়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশের সহায়তায় বিদ্যালয় ত্যাগ করি। এ অবস্থায় স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কারণ দর্শাও ও সাময়িক বরখাস্তের দুটি চিঠি পাঠায়। এর পরদিন শিক্ষার্থীরা আমাকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করায় প্রভাবশালী ওই মহলটি।”

চিঠিতে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, “পাবনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষের সাথে আপনার অনৈতিক/অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার রিপোর্ট বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, ইলেকিট্রনিক মিডিয়া ও ফেসবুকে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়, যা অত্র বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয়ানক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। যার ফলশ্রুতিতে সকল শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে আপনার বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে, এমনকি সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণও শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আপনার অপসারণ দাবি করে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সর্বসম্মত সিদ্বান্ত অনুযায়ী বিদ্যালয়ের সুনাম ও স্বার্থরক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের  মাঝে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার নিমিত্তে আপনাকে ১৪ জুলাই হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হইল।”

চিঠিতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মণ্ডলসহ ১০ সদস্য স্বাক্ষর করেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের রফিকুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীরা কার কথায় মানববন্ধন করেছে বিষয়টি আমার জানা নেই। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্বান্ত মোতাবেক বিধান মেনেই শোকজ ও সাময়িক বরখাস্তের দুটি চিঠি একসঙ্গে পাঠানো হয়েছে।”