ভেজালবিরোধী অভিযানে ভোক্তা অধিকার কর্মকর্তা ‘লাঞ্ছিত’  

ভেজালবিরোধী অভিযান চলাকালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। 

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2019, 05:50 PM
Updated : 30 May 2019, 05:50 PM

বৃহস্পতিবার জেলা শহরের সেন্ট্রাল রোডে এ ঘটনা ঘটে বলে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আল-আমিন জানান।

তিনি বলেন, নিয়মিত ভেজাল বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে তার নেতৃত্বে ভেজাল বিরোধী অভিযান চলাকালে ব্যবসায়ীরা তাকে আটকে রাখে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

আল-আমিন বলেন, দুপুরে অভিযান শুরু করলে শহরের কোর্ট রোডে রাজমহলে ইফতার সামগ্রীতে পোকা থাকায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন তিনি।

“এরপর সেন্ট্রাল রোডের একটি কাপড়ের দোকানে গিয়ে বিদেশি প্যান্টের দাম ২৪০০ টাকা দেখে কাগজপত্র দেখতে চাই। কাগজপত্রে ধরা পড়ে এটি দেশি প্যান্ট এবং দাম সাতশ টাকা। তাই এই দোকানকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।”

তিনি বলেন, পরে সেন্ট্রাল রোডে এমবি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে পণ্যের অতিরিক্ত দাম রাখা এবং নিজেদের ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণের অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়।

“এরপর বিলাস ডিপার্টমেন্টে গিয়ে পণ্যের অতিরিক্ত দাম রাখা, বিদেশি পণ্যের দাম নিজেদের মতো করে নির্ধারণ করা, দেশি পণ্যকে বিদেশি বলে বিক্রির অভিযোগ করলে বিলাস কর্তৃপক্ষ বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে।”

আল-আমিন বলেন, এ সময় আশেপাশের ব্যাবসায়ীরা এক হয়ে জেলা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে পাশের একটি দোকানে জিম্মি করে রাখে। এ সময় আশপাশের ব্যবসায়ীরা দোকান পাঠ বন্ধ করে রাস্তায় অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে বিলাশ ডিপার্টমেন্টের স্বত্বাধিকারী সুমন আহমদ বলেন, “সারা বছর জেলা ভোক্তা অধিকার ঘুমিয়ে থাকে; কিন্তু যখন ২০ রমজান আসে তখন জমজমাট ব্যবসার টাইমে তারা অভিযান পরিচালনা করে ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটায়।”

মৌলভীবাজার জেলা বিজনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, “কোনো ধরনের লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেনি; বরং আমরা ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উত্তেজিত ব্যবসায়ীদের হাত থেকে উনাকে নিরাপদ স্থানে রেখেছি।”

এই ব্যবসায়ী নেতা অভিযোগ করেন, নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা ভোক্তা অধিকার যখন তখন অভিযান পরিচালনা করে ইচ্ছেমতো জরিমানা করে আসছে।

এ ব্যপারে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আল-আমিন বলেন, “পণ্যের অতিরিক্ত দাম, বিদেশি পণ্যে নিজেদের মতো করে দাম বসানো এবং পণ্যের গায়ে থাকা দামকে টেম্পারিং করে নিজেদের মতো বসানোর অভিযোগে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু তারা আমাদের লাঞ্ছিত করে সরকারি কাজে বাধা দেয়।”

এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভেজাল বিরোধী অভিযানে গেলে ব্যবসায়ীরা আল-আমিনকে জিম্মি করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।