নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগে সহায়তা করেছে জোবায়ের: পিবিআই

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে আগুন দিতে সহায়তা করার কথা আসামি জোবায়ের আহমেদ স্বীকার করেছেন বলে পিবিআই জানিয়েছে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2019, 12:51 PM
Updated : 21 April 2019, 12:51 PM

রোববার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তিনি ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল গণমমাধ্যমকে বলেন, “আসামি জোবায়ের আহমেদ হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত।

“ঘটনার সময় জোবায়ের আহমেদ আলীম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে হাত-পা বাঁধতে ও নুসরাতের গায়ে আগুন ধরাতে সহযোগিতা করেছিল। তারা সকলে বোরকা পরে পূর্ব থেকে ঘটনাস্থল সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে অবস্থান করছিল।” 

গত ৬ এপ্রিল সকালে সোনাগাজী সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি আলিমের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে গেলে বোরকাপরা কয়েকজন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামিসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় হত্যার দায় স্বীকার করে এ পর্যন্ত ৮ আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন।

এরা হলেন নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন ও জোবায়ের আহমেদ।

আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখতে ব্যাংকে পিবিআই

পিবিআই কর্মকর্তা ইকবাল জানান, নুসরাত হত্যায় আর্থিক লেনদেনের বিষয় খতিয়ে দেখতে একাধিক ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় কাজ করছে পিবিআই।

রোববার দুপুরে তার নেতৃত্বে একটি দল সোনাগাজী উপজেলার জনতা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক-এর শাখাগুলো পরিদর্শন করেছে। এ সময় তারা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলার ব্যাংকের হিসাব পরীক্ষা করেন।

তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, এ মামলায় গ্রেপ্তার ইফতেখার হোসেন রানা ও এমরান হোসেন মামুনকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত শনিবার বিকালে রাঙামাটির টিএনটি এলাকা থেকে রানা ও কুমিল্লার পদুয়া এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ মামলা এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।

এরা হলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক (সদ্য বহিষ্কৃত) মাকসুদ আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক আবছার উদ্দিন, নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নুর হোসেন, কেফায়াত উল্যাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম শরিফ, হাফেজ আবদুল কাদের, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, ইফতেখার হোসেন রানা ও এমরান হোসেন মামুন।

এদের মধ্যে মামলার এজহারভুক্ত আট আসামির মধ্যে সবাই গ্রেপ্তার আছেন।