এছাড়া শিবিরের আশপাশে মুদি দোকানসহ যত্রতত্র এসব গ্যাস অনুমতি ছাড়াই কেনাবেচা চলছে। এতে ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা শিবিরে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আশ্রয়কেন্দ্রে দায়িত্বরত দেশি এনজিওগুলোর সমন্বিত মোর্চার কো-চেয়ারম্যান মো. আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, ক্যাম্পগুলোয় জ্বালানির চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন আড়াই হাজার মেট্রিক টন কাঠ দরকার হয়। এতে আশপাশের বনভূমি চরম হুমকির মুখে পড়ে।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি বা কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তিনি স্বীকার করেন।
খোকা বলেন, প্রশাসনের পরামর্শমত অনুমতি নেওয়া জরুরি। সিলিন্ডারগুলো কতটুক নিরাপদ এবং মেয়াদ আছে কিনা এসব দেখার জন্য কোনো ধরনের মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেই। নিয়মিত মনিটরিং করা দরকার।
“যেসব সংস্থা সিলিন্ডার ও বার্নার বিতরণ করছে, তারা যেন ব্যবহারকারীদের সিলিন্ডার ও চুলার সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জ্ঞাত করে এ ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক। তা না হলে অজ্ঞতার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।”
নিয়মিত নজরদারির জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ শিবির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি ট্রাস্কফোর্স গঠন করা জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
“এসব রোহিঙ্গা শিবিরে সহজে পুড়ে যাওয়ার মত উপকরণ দিয়ে ঘর তৈরি হয়েছে। ঘরগুলোর মধ্যে দূরত্বও নেই। একটির সঙ্গে আরেকটি একেবারেই লাগোয়া। সিলিন্ডার মজুদ ও বিক্রির দোকানগুলোও গড়ে উঠেছে খুবই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। এতে অসতর্কতাবশত বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।”
তিনি এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, “মূলত ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ ও সরবরাহ করা হলে অনুমতি নেওয়ার সরকারি বিধান রয়েছে। যেহেতু সংস্থাগুলো বিতরণের উদ্দ্যেশেই সিলিন্ডারগুলো মজুদকরণ করছে, তাই তেমন নজর দেওয়া হয়নি।”
দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়াসহ অন্যান্য বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
কর্মরত বিভিন্ন সংস্থাসহ আইএনজিওগুলোর সমন্বয় কমিটি ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেটর গ্রুপের মুখপাত্র সৈকত বিশ্বাস বলেন, জেলা প্রশাসনসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি নিয়ে সমন্বয় সভা করে গ্যাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
“তাই গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ ও বিতরণে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অনুমতির বিষয়টি নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিবেচনায় আসেনি।”
তবে গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের সময় ব্যবহার বিধি হাতে-কলমে শিখিয়ে দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
সৈকত বলেন, সিলিন্ডারগুলো মজুদ করার সময় বসতঘর নেই এমন জায়গা বেছে নেওয়া হয়।