পাটের লোকসান পাটকাঠিতে পোষানোর চেষ্টা

পার্টিকেল বোর্ডসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ‘সোনালি আঁশের রুপালি কাঠি’ নামে পরিচিত পাটকাঠির কদর দিন দিন বাড়ছে ফরিপুরে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিমফিজুর রহমান শিপন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2018, 07:00 AM
Updated : 11 Sept 2018, 07:00 AM

পাটে এ বছর লোকসান হচ্ছে জানিয়ে জেলার কৃষকরা বলছেন, তারা এখন পাটকাঠি বেচে লোকসান পোষানোর চেষ্টা করছেন।

বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, চাষিরা আঁশ ছাড়ানোর পর পাটকাঠি আর আগের মত অযত্ন-অবহেলায় ফেলে রাখছেন না। যত্ন করে গুছিয়ে রাস্তার ধারে ও অন্যান্য ফাঁকা জায়গায় শুকিয়ে নিচ্ছেন।

বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর গ্রামের পাটচাষি সিদ্দিকুর শেখ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগে মানুষ স্থানীয়ভাবে রান্নার খড়ি, ঘরের বেড়া, পানের বরজে ছাউনি দিতে কাজে লাগাত এই কাঠি।

“এখন পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে ব্যবহৃত হওয়ার ব্যাপারিরা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।”

পাটের আঁশ নিয়ে হতাশার মধ্যে পাটকাঠি নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেক কৃষক।

সদর উপজেলার মাচ্চর গ্রামে কাজল ঘোষ বলেন, “চাষে যে টাকা খরচ হয়েছে আঁশ বেচে তা ফেরত আসছে না। এখন পাটকাঠিই শেষ ভরসা। যদি তাতে কিছু হয়।”

পাটের আঁশে এ বছর লোকসান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর কৃষি সম্পসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী।

“তবে পাটকাঠি বিক্রি করে লোকসান পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। এখন ফরিদপুর থেকে বিভিন্ন জায়গায় পাটকাঠি যাচ্ছে। বরিশাল, দাউদকান্দি, ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টিকেল বোর্ড কারখানায় এ কাঠি ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া পানের বরজে এটা খুবই দরকারি।”

এ বছর ফরিদপুরে ৮২ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে তিনি জানান।

পাটকাঠির দাম সম্পর্কে চাষিরা বলেন, তারা ১০০ মোটা কাঠি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

পাঁচ-ছয় বছর ধরে পাটের মৌসুমে কাঠি কেনাবেচা করেন বলে জানান বোয়ালমারী উপজেলার লংকারচর গ্রামের মো. দেলোয়ার শেখ।

তিনি বলেন, “দূরের ব্যাপারিরা নৌকা ও ট্রলারে করে কিনে নিয়ে যায়। এখন অনেকেই এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে।”

পাটকাঠি নতুন সম্ভাবনা দেখিয়েছে বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া।

তিনি বলেন, “জেলার ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য সোনালি আঁশের কথা ভাবছি। কিভাবে এর বহুবিধ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় তা আমরা খুঁজে দেখছি। সোনালি আঁশের রুপালি কাঠি এখন কৃষককে নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। আমরা পাটকলের মালিক ও চেম্বার নেতাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলছি।”