সারাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত

যথাযোগ্য ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2018, 02:24 PM
Updated : 22 August 2018, 02:46 PM

বরাবরের মতো বুধবার সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারিসহ চার স্তরের নিরাপত্তার মধ্যে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে ঈদ উদযাপনের খবর এসেছে।

সিলেট

সিলেটের শাহী ঈদগাহে লাখো মানুষ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন।

সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে জামাতে অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতসহ সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নামাজে ইমামতি করেন বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফিজ মাওলানা কামাল উদ্দিন।

টিলায় সবুজে আচ্ছাদিত পরিবেশে শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজে জমায়েত মানুষের সারি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত প্রাচীন ঐতিহ্যের নিদর্শন শাহী ঈদগাহে এবার ঈদের জামাতে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন।

এছাড়া দরগাহ হযরত শাহজালাল (রহ.) জামে মসজিদে ঈদুল আজহার জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় ও হযরত শাহপরান (রহ.) মাজারের মসজিদ প্রাঙ্গণে সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়।

কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে জামাত সকাল সাড়ে ৭টা ৩০ মিনিটে এবং দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৮টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়।

আঞ্জুমানে খেদমতে কুরআনের উদ্যোগে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে।

সিলেট কালেক্টরেট মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়।

এছাড়াও সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে মসজিদ গুলোতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

কুমিল্লা

সকাল ৮টায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এতে ইমামতি করেন মাওলানা ক্বারী মো. ইব্রাহিম।

বৃষ্টির কারণে ঈদগাহে নামাজ না হয়ে পার্শ্ববর্তী জিমনেসিয়ামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এতে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ঈদের জামায়াতে অংশ নেন। 

নামাজ শেষে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান, সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীসহ দেশের সকল মানুষের উন্নতি সমৃদ্ধি সু-স্বাস্থ্য কামনা করে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মুসল্লি মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে মোনাজাত করেন। 

এছাড়া নগরের মনোহরপুর সোনালী জামে মসজিদ, মুন্সেফবাড়ি, পুলিশ লাইন জামে মসজিদ, সুজা বাদশা জামে মসজিদ, দারোগাবাড়ি জামে মসজিদসহ কুমিল্লার ১৭টি উপজেলায় ঈদগাহ, মসজিদসহ ছোট-বড় ৬৪৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

ফরিদপুর

সকাল ৮টায় ফরিদপুর শহরের চাঁনমারী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এখানে নামাজ আদায় করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তার ছেলে ও প্রধানমন্ত্রীর জামাতা খন্দকার মাশরুর হোসেন মিতু, পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মৃধা প্রেসক্লাব সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ কয়েক হাজার মানুষ। 

ফরিদপুরে এক হাজার ১৮৯টি ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

ফরিদপুর পুলিশ লাইনস ময়দান, চকবাজার জামে মসজিদে ও চন্দ্রপাড়া পাক দরবার শরীফে বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মানুষ নামাজ আদায় করেন।

মাগুরা

মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে সকাল ৮টায় ঈদুল অজহার প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামাতে ইমামতি করেন মাগুরা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মওলানা রইস উদ্দিন।

প্রধান জামায়াতে নামাজ আদায় করেন জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান, পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান, পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুলসহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

ময়মনসিংহ

সকাল ৮টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় শহরের কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে।

এতে ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান ঈদগাহ মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন।

জামাতে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিব খান, পৌর মেয়র ইকরামুল হক টিটু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত-উর রহমান শান্তসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শহরের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ঈদের নামাজ আদায় করেন।

এছাড়া শহরের বড় মসজিদ, আকুয়া মার্কাজ মসজিদ, চরপাড়া জামিয়া ইসলামিয়া, পুলিশ লাইন জমে মসজিদ, কেওয়াটখালী ঈদগাহ মাঠ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ বিভিন্ন মাঠে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এর বাইরে জেলার ১৩টি উপজেলায় ২১৫৯টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রতিটি ঈদগাহে বিপুল আইনশৃংখলা বাহিনী নিয়োজিত ছিল।

নীলফামারী

সকাল সোয়া ৮টায় নীলফামারী পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ইদগাহে ঈদের প্রধান নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান এই জামাতে ইমামতি করেন নীলফামারীর কেন্দ্রীয় বড় মসজিদের ভারপ্রাপ্ত খতিব হাফেজ মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম।

এখানে নামাজা আদায় করেন নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, নীলফামারী পৌরসভা মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্র্তা মামুন  ভূইঁয়া, সদর থানার ওসি বাবুল আকতার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান জামানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

এর আগে সকাল সকাল ৮টায় নীলফামারী পুলিশ লাইন্স ঈদগাহে এবং একই সময় মুন্সিপাড়া আহলে হাদিস ঈদগাহে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

সকাল সাড়ে ৮টায় বাড়াইপাড়া নতুন জামে মসজিদ ঈদগাহে, কুখাপাড়া (সাবেক ধনীপাড়া) ঈদগাহে এবং জোরদগা ঈদগাহে নামাজ হয়।

সকাল পৌনে ৯টায় কলেজ স্টেশন ঈদগাহে এবং গাছবাড়ি ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এছাড়া ডিমলা উপজেলার প্রধান ঈদগাহে সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, জলঢাকা উপজেলার প্রধান ঈদগাহে সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা এবং সৈয়দপুর উপজেলার প্রধান ইদগাহে সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরী নামাজ আদায় করেন।

জেলার প্রায় সাড়ে আটশ ঈদগাহে নামাজ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এসব ঈদগাঁহ্ ময়দান এলাকায় পর্যপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলা কারাগার, হাসপাতাল, এতিমখানা এবং ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।