রাজশাহীর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনের পরিবেশকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ করতে’ বিএনপি নেতারা ‘নিজেরাই পরিকল্পিতভাবে’ ওই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান।
ওই হামলায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে ‘ফোনালাপের’ একটি অডিও হাতে পাওয়ার পর মতিউর রহমান মন্টুকে শনিবার গভীর রাতে তার রামচন্দ্রপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে মহানগর পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতেখায়ের আলম জানান।
রাজশাহীর পুলিশ কমিশনার এসএম হাফিজ আক্তার রোববার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ওই অডিও রেকর্ড সাংবাদিকদের শোনান।
তিনি বলেন, “ওই ঘটনায় জড়িত সকল ব্যক্তি, যারা পরিকল্পনাকারী, মদদদাতা ও সহযোগী, তাদের গ্রেপ্তারপূর্বক প্রচলিত আইনে বিচারের আওতায় আনতে আমরা তৎপর রয়েছি।”
ওই ঘটনায় পথসভা পণ্ড হয়ে যায়, বিস্ফোরণে আহত হন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবসহ অন্তত তিনজন।
বিএনপি ওই ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মীদের দায়ী করলে এর জবাবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছিলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের নির্দেশে দলীয় কর্মীরাই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।
ওই ঘটনার পরদিন বোয়ালিয়া থানার এসআই শামীম হোসেন অজ্ঞাতপরিচয় আটজনের নামে বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
এদিকে ওই বোমা হামলার ঘটনা নিয়ে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে মতিউর রহমান মন্টুর কথিত ফোনালাপের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসে শনিবার রাতে।
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন তাদের ফেইসবুক পেইজে ওই অডিওর লিংক শেয়ারও করেন।
ওই অডিওর ভিত্তিতে কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেখানে বলা হয় ‘ভাইয়ার কাছে’ ক্রেডিট নেওয়ার জন্য ‘বিএনপির দুই কর্মীকে দিয়ে’ ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
রোববার দুপুরে পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে ওই অডিও বাজিয়ে শুনিয়ে বলা হয়, বোমা হামলার দুই দিন পর ১৯ জুলাই টিপুর সঙ্গে মন্টুর ওই ফোনালাপ হয়।
পুলিশ কমিশনার বলেন, বোমা হামলার ঘটনায় ঘনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন একজনকে পুলিশ আটক করেছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু গুরুত্বপুর্ণ তথ্যও পাওয়া গিয়েছিল। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ ওই অডিও রেকর্ড হাতে পায়।
“সেখানে রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এক কে এম মতিউর রহমান মন্টু বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলামকে ককটেল হামলায় নিজেদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত দুইজন নিজেদের ব্যক্তির নামও উল্লেখ করেন।”
ওই অডিও রেকর্ডে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত এবং জাভেদ নামে আরেকজনের নাম আসে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, “ওই ঘটনায় যারাই জড়িত আছে, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে।”
আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহীর পাশাপাশি সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশনেও নির্বাচন হবে।