রাজশাহীতে বুলবুলের পথসভায় হাতবোমা বিস্ফোরণ, আহত ২

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পথসভার কাছে তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটনো হয়েছে।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2018, 06:23 AM
Updated : 17 July 2018, 07:05 PM

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর সাগরপাড়া মোড়ে এ ঘটনায় আহত দুইজনকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।

বিএনপি এই বিস্ফোরণের জন্য ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের দায়ী করলেও পুলিশ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।  

বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ বলছেন, তারা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। কারা হামলা চালিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখবেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুলবুলের নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে জেলা ছাত্রদল সাগরপাড়া মোড়ে এ পথসভার আয়োজন করে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন।

দুলুর বক্তৃতা চলার মধ্যেই মোটরসাইকেলে করে আসা কয়েকজন যুবক পথসভার পাশে পরপর তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। ফলে পথসভা পণ্ড হয়ে যায়।

এ সময় সেখানে অবস্থানরত বাংলাভিশনের সাংবাদিক পরিতোষ চৌধুরী আদিত্য এবং স্থানীয় দোকানদার স্বপন কুমার দাস আহত হন। স্থানীয়রা তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। 

বিস্ফোরণে পথসভা পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে বিক্ষোভ করেন।

রুহুল কুদ্দুস দুলু বলেন, “ভোটারদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছিল তা কাটানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। এর মধ্যে সরকার আমাদের নির্বাচনী প্রচারে বোমা হামলার করল।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান এবং দলের রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকতও উপস্থিত ছিলেন এ সময়।

রাজশাহীর উপ-পুলিশ কমিশনার আমীর জাফর বলেন, “যে কোনো দলের পথসভা করতে পুলিশের অনুমতি লাগে। এ পথসভার জন্য জেলা ছাত্রদল কোনো অনুমতি নেয়নি।”

আর বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ বলেন, বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পথসভার কাছে হাতবোমার বিস্ফোরণের খবর পেয়ে তারা সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছেন।

তিনি বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

‘ভোটারশূন্য করতে এই হামলা’

বুলবুলের প্রচারে হাতবোমা বিস্ফোরণ পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমরা মনে করি, আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি করে ভোটারশূন্য নির্বাচন করতেই এই হামলা।”

সরকার সমর্থকরাই বুলবুলের প্রচারে এই হামলা চালায় বলে দাবি করেন রিজভী।

‘দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করতে পারে, প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করতে পারে’- ওবায়দুল কাদের এই বক্তব্যের জবাবে তাকে ‘আয়নায় নিজের চেহারা দেখার’ আহ্বান জানান রিজভী।

তিনি বলেন, “বাহ!, পার্টি অফিসের সামনে, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করা কি অগণতান্ত্রিক, মানববন্ধন-অবস্থান কর্মসূচি করা কি অগণতান্ত্রিক? এই কথাগুলো তো বললেন না।”

রিজভী বলেন, “তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) কি ভুলে গেছেন, সমালোচনা করার কারণেই ২০১৩ সালের শেষ দিকে গভীর রাতে পুলিশ কীভাবে এই কার্যালয়ের দরজা-জানালা ভেঙে আমাকে ও আমার সহকর্মী বেলাল আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছিল? এর আগে  এই কার্যালয়ের দরজা ভেঙে পৈশাচিকভাবে হানা দিয়ে সবকিছু তচনচ করে মহাসচিবসহ ১৫৪ জন নেতা-কর্মীদের আটক করে নিয়ে যাওয়ার কথাও উনি (ওবায়দুল কাদের) হয়ত ভুলে গেছেন। এসব কি কোনা গণতান্ত্রিক রীতির মধ্যে পড়ে?

“আমি ওবায়দুল কাদের সাহেবসহ সরকারকে অনুরোধ করব, আয়নায় ভালো করে নিজের চেহারা দেখুন।”