তারা যুদ্ধাপরাধ মামলায় বাবুল চিশতীর দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির দাবি করেছেন।
শেরপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড কার্যালয়ের সামনে রোববার এক মানববন্ধন করেন জেলার নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
শেরপুর জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও জেলা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম যৌথভাবে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ’৭১ এর সভাপতি আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফকির আখরুজ্জামান, জেলা ঘাতক দালাল নির্মল কমিটির আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মাওলা ও সদস্য সচিব হারেজ আলী।
বক্তরা যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি বাবুল চিশতীর মামলা দ্রুত তদন্ত করে তার শাস্তি কার্যকরের দাবি জানান।
এ সময় বাবুর চিশতীর বিচার ও ফাঁসির দাবিতে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন অ্যাডভোকেট সুরুজ্জামান।
পরে বাবুল চিশতীর ফাঁসির দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এছাড়াও অনেক মুক্তিযোদ্ধা, তাদের স্বজন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের অনেক লোককে নির্যাতন করে হত্যা করেন।
এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাবুল চিশতীসহ বেশ কয়েকজনের নামে মামলা হয়েছে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শেরপুর জেলা ইউনিট কমান্ড, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ শেরপুর জেলা শাখা, জেলা কমিউনিস্ট পার্টি, কবি সংসদসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
মানববন্ধনে বাবুল চিশতীর ফাঁসির দাবিতে ব্যানার ও ফেস্টুন ব্যবহার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
ফারমার্স ব্যাংক অর্থ কেলেংকারির মামলায় বাবুল চিশতী এখন জেল হাজতে আছেন।
জেলা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ৭১’এর সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান বলেন, শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নাচনমহুরী গ্রামের মো. হামিদুল ইসলাম ১৯৭১ সালে তার বাবাকে হত্যার অভিযোগ আনেন চিশতীর বিরুদ্ধে।
“এ অভিযোগে তিনি ২০০৯ সালের ১ জুলাই শেরপুরের বিচারিক হাকিম আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন বাবুল চিশতীর বিরুদ্ধে।”
আদালত অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য ঝিনাইগাতী থানার ওসিকে নির্দেশ দিলে ওই বছরের ১৩ জুলাই অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে নেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ নভেম্বর দুপুরে বাদীর বাবা ওই সময়ে ঝিনাইগাতীর কাংশা ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুখলেছুর রহমানকে বাবুল চিশতীসহ ১৩ জন আল বদর বাহিনীর সদস্য বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আহাম্মদনগর হানাদার পাক বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে।
পরে তাকে ৯ নভেম্বর সকালে জামালপুরের বকশিগঞ্জ বাজারের তৎকালীন গরুহাটা এলাকায় বটগাছের সঙ্গে হাতে পায়ে লোহার পেরেক মেরে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাবুল চিশতীসহ ১৩ জনকে আসামি করে দায়েরকৃত মামলাটি দীর্ঘদিন শেরপুরের বিচারিক হাকিম আদালতে থাকার পর ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে।