বেগম রোকেয়া হলের প্রথম বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছাত্রফ্রন্ট কর্মী আফসানা আহমেদ ইভাকে সোমবার রাতে বের করে দেওয়া হয়।
১৭ ঘণ্টা বাইরে থাকার পর মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে হলে ফিরিয়ে দিয়ে আসে।
এর আগে সকালে হল গেইটের সামনে তিনি আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন।
ইভা সাংবাদিকদের বলেন, গত বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুরে আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
ওই কর্মসূচিতে তাকে অংশ নিতে বলেন ওই হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু তিনি কর্মসূচিতে অংশ নিতে অস্বীকার করেন বলে জানান ইভা।
হলে সংস্কার কাজ চলায় হেলথ কেয়ার সেন্টারে সাময়িকভাবে কিছু ছাত্রীকে রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সৌরভ দাশ বলেন, নিরাপত্তাহীনতার কারণে ইভা হেলথ কেয়ার সেন্টারে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন। গভীর রাত পর্যন্ত তিনি হলের ফটকে অবস্থান করেন। পরে রাত ৩টার দিকে বাকৃবি ছাত্রফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক ও ওই হলের ছাত্রী ইসরাত জাহানের রুমে চলে যান।
সৌরভ বলেন, “মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে আফসানা হলের ফটকের সামনে এসে অবস্থান ও আমরণ অনশন শুরু করেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনাটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং বেলা ১২টার দিকে প্রক্টর ওই ছাত্রীকে তার কার্যালয়ে নিয়ে যান।”
প্রক্টর আতিকুর রহমান বলেন, বেলা ১২টার দিকে তিনি ইভাকে তার কার্যালয়ে নিয়ে যান। বিকালে তিনি নিজে, সাবেক প্রক্টর এ কে এম জাকির হোসেন এবং প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ইভাকে হলের সিটে দিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রীর সাথে একটু ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিল। হলের প্রভোস্টকে সাথে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। ছাত্রীটি বর্তমানে নিজ হলের সিটে অবস্থান করছে।”
বেগম রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ইসমত আরা বেগম বলেন, “সমস্যা তৈরি হওয়ায় একটি তদন্ত কমিটি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিই। আপাতত আফসানাকে সামায়িকভাবে হেলথ কেয়ার সেন্টারে অন্যান্য ছাত্রীদের সাথে থাকতে বলি; কিন্তু সে তা করেনি।”
এদিকে, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাকৃবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি তানিয়া আফরিন সিনথির নেতৃত্বে বেশকিছু ছাত্রলীগকর্মী ও শিক্ষার্থী ইভার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে হল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
ওই সময় ছাত্রীরা বলেন, ইভা ছাত্রী হলে ওঠার পর থেকেই সিনিয়র শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বেয়াদবি করছিলেন। এমনকি প্রভোস্টের সঙ্গেও বেয়াদবি করেন। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে হল থেকে বের করে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তানিয়া আফরিন সিনথির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।