সন্তানের মুখ দেখা হলো না দুলালের

স্ত্রীর গর্ভে তৃতীয় সন্তানকে রেখেই সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিলেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের বালুকোল গ্রামের মো. দুলাল মণ্ডল (৩২)। সেখানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ায় সেই সন্তানের মুখ দেখা হল না আর তার।

ইসরাইল হোসেন বাবুসিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2018, 04:06 PM
Updated : 7 Jan 2018, 04:29 PM

শনিবার ভোরে সৌদি আরবের ডিজান প্রদেশে ওই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় দুলালসহ ১০ বাংলাদেশি। ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে ঋণ করে প্রায় ১১ মাস আগেই সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।

শনিবার দুপুরে তার নিহত হওয়ার খবর পৌঁছায় বালুকোল গ্রামে পরিবারের কাছে।

স্ত্রী স্বপ্না নাবালক তিন সন্তানকে নিয়ে বার বার কান্নায় মুর্ছা যাচ্ছেন। বয়োবৃদ্ধ বাবা আকবর মন্ডল ও মা হাজেরা বেগম শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। মরদেহ কবে আসবে তাও তারা জানেন না।

ছেলের মরদেহ শেষ বারের মত দেখতে এবং নিজ হাতে কবর দেওয়ার জন্য তা ফেরত আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন আকবর মন্ডল।

দুলালের চাচা মোস্তফা জানান, দুলালের বড় দুই ভাই মারা গেছেন। ছোট এক ভাই দুর্ঘটনায় পঙ্গু। আরেক ভাই প্রতিবন্ধী। এ অবস্থায় ধার-দেনা করে ১০ মাস ২২ দিন আগে সৌদি আরবে যায় দুলাল।

“সেখানে ডিজান প্রদেশের আল ফাহাদ কোম্পানির পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করত। শনিবার ভোরে কাজের যাওয়া সময় গাড়ি খাদে পড়ে দুলালসহ ১০ জন মারা গেছে বলে ওই দিনই তার এক সহকর্মী ফোন করে জানায়।”

আকবর মন্ডল বলেন, দুলালের সায়েম (৯), সাব্বির (৫), বায়েজিদ (৫ মাস) নামে তিন ছেলে রয়েছে। ছোট ছেলেকে বায়েজিদ এখনও বাবার মুখ দেখেনি।

মা হাজেরা বেগম বলেন, “পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ছেলে দুলাল মারা গেল। এখনও ছেলে মরদেহ দেশে আসেনি। কবে-কখন আসবে তাও জানি না। নাবালক তিনটি ছেলেকে দেখার কেউ রইলো না।”

নাতিদের সহায়তা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কামরুন ন্নাহার সিদ্দীকা জানান, কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য পাওয়ার পর মরদেহ ফেরত আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হবে।