বৃহস্পতিবার গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
এ সময় গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর, জয়দেবপুর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আটকরা হলেন নড়াইলের লোহাগড়ার মইশাপাড়ার এমদাদুল ইসলাম ওরফে আকাশ ওরফে এনায়েত (৩৪), মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির আব্দুল্লাহপুরের আব্দুর রাজ্জাক ওরফে নজরুল ওরফে লাদেন (৪৫), ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের মহির খারুয়ার শাকিব হাসান লিটন ওরফে সাহাজ্জল হোসেন লিটন ওরফে মেজর নাইম (৪৯) এবং দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের বাওপুকুরের মো. মঞ্জুর হোসেন ওরফে মঞ্জু ওরফে আরিফ হোসেন (৩৬)।
এদের মধ্যে শাকিব হাসান লিটন মেজর এবং অন্যরা বিভিন্ন পদের সেনা সদস্য বলে পরিচয় দিতেন।
পুলিশ সুপার জানান, বুধবার বিকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বোর্ডবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমোক্ত দুইজনকে এবং তাদের স্বীকারোক্তিমতে অপর দুইজনকে গাজীপুর সিটির চান্দনা-চৌরাস্তা থেকে আটক করা হয়েছে।
তাদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এসপি বলেন, আটকদের মধ্যে নাইম সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট, এমদাদ সাবেক করপোরাল, মঞ্জু সাবেক মেস ওয়েটার পদে চাকরি করতেন।
এসপি হারুন জানান, গাজীপুরের ভবানীপুর, বোর্ডবাজার, ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানার মাটিকাটা ও শনির আখরা এলাকায় তাদের অস্থায়ী কার্যালয় ছিল। সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে ওইসব অফিসে নাইম সেনাবাহিনীর পোশাক পরে মেজর পরিচয়ে বসতেন।
তাদের লোকজন বিভিন্ন জেলা থেকে দালালের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে চাকরি প্রত্যাশীদের নিয়ে ওইসব অফিসে যেত। পরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদে চাকরির নিয়োগপত্র দিত বলে হারুন বলেন।
“কিন্তু চাকরি প্রত্যাশীরা নিয়োগপত্র পাওয়ার পর চাকরিতে যোগদান করতে গেলে তাদের কৌশলে ১০/১৫ দিনের ছুটি দিয়ে তারা অফিস গুটিয়ে গা ডাকা দিত।”
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আসা সিরাজগঞ্জের সবুজ মোল্লা মালি পদের জন্য ৬ লাখ, একই জেলার আব্দুস সাত্তার আহমেদ ইউডি পদের জন্য ৮ লাখ টাকা ওই চক্রকে দিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এসব ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়দেবপুর থানা মামলা হয়েছে বলে জানান এসআই নুরুল ইসলাম। তিনি নিজে ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলে জানান।
এসআই নুরুল ইসলাম জানান, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মতিউর রহমানও ওই চক্রের শিকার হয়েছেন। তিনি তার ইউনিয়নের আট জনকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার জন্য ওই চক্রের হাতে ৫২ লাখ টাকা আদায় করে তুলে দিয়েছেন। পরে বুঝতে পেরেছেন তিনি প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন। তিনিও ওই চক্রকে খুঁজছেন।
জয়দেবপুর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, এ প্রতারক চক্রটি হাইওয়ে দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে আসা লোকজনদের কৌশলে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে র্যাব, ডিবি পরিচয় দিয়ে টাকা ছিনতাই করত।