একটি অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি বলেন, “তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Published : 23 Jan 2025, 09:12 PM
ফরিদপুরে এক বালু ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে চার লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।
মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় তারা একটি অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান।
অভিযোগকারী মো. ইব্রাহীম শেখ (৪৫) ফরিদপুর সদরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম রামকান্তপুর গ্রামের তেলামুদ্দিনের ডাঙ্গী এলাকার মৃত সামাদ শেখের ছেলে।
যাদের বিরুদ্ধে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ, তারা সম্প্রতি এলাকায় আব্দুর রব নামে এক ব্যক্তির পুকুর থেকে বালু তোলার জন্য চুক্তি করায় তার ওপর ক্ষিপ্ত বলে দাবি ইব্রাহীমের।
বুধবার পাশের চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমাধবদিয়া আরশাদ মুন্সী ডাঙ্গী গ্রামের শাজাহান বেপারী (৪৫) ও ফয়সাল শেখের (২২) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
ঘটনার বর্ণনায় ইব্রাহীম শেখ বলেন, “আমার ভাতিজির বিয়ে উপলক্ষে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শহর থেকে বাজার করে বাড়ির পাশে এসে নামা মাত্রই ৬-৭টি মোটরসাইকেলে ১০-১২ জন যুবক এসে ঘিরে ধরে। রাতে তাদের কাউকে আমি চিনতে পারি নাই।
“কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা টানাহেঁচড়া করে একটি মোটরসাইকেলে করে আমাকে তুলে শহরের বনলতা সিনেমা হলের পেছনে নিয়ে যায়।”
ইব্রাহীম বলেন, “সেখানে বালু ব্যবসায়ী শাজাহান ও ফয়সালকে দেখতে পাই। তখন কিছু ব্যক্তি চাকু দেখিয়ে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
ওরা আমাকে বলে, রবের পুকুর থেকে বালু তোলার চুক্তিপত্র তাদের ফেরত দিতে। পরে আমি তা ফেরত দিতে রাজি হলে রাত ১২টার দিকে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “তবে যখন ওরা আমাকে তুলে নিয়ে যায়, তখন ভাতিজির বিয়ে উপলক্ষে গরু কেনার জন্য আমার পকেটে ৪ লাখ ২ হাজার টাকা ছিল। আমাকে ভয় দেখিয়ে সেই টাকা নিয়ে যায়।”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুদি দোকানি শেখ ওহিদ বলেন, “হঠাৎ করেই কয়েকটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন যুবক এসে কোনো কথা না বলেই ইব্রাহীমকে তুলে নিয়ে যায়। ওরা লোকজন বেশি থাকায় ভয়ে আমি কিছু করতে পারিনি, শুধু দেখছি। পরে মানুষজনকে জানাই।”
বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “এমন ভয়ানক ঘটনায় আমরা আতংকিত। এভাবে যদি একজন মানুষকে তুলে নিয়ে যায়, তাহলে এলাকায় থাকা কষ্টকর। আমরা প্রশাসনের কাছে জোড়ালোভাবে দাবি জানাই, এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।”
এদিকে ইব্রাহীম শেখকে যারা তুলে নিয়ে গেছেন, তাদের চেনেন না বলে শাজাহান বেপারী দাবি করেন।
তিনি বলেন, “আমি বালুর ব্যবসা করি না, ব্যবসা করে ফয়সাল। ওইদিন আমারেও তুলে নিয়ে যায় সাক্ষী দেওয়ার জন্য।
“কারণ, রবের পুকুর থেকে বালু তোলার নামে মিথ্যা কথা বলে ৯ বিঘা জমি থেকে মাটি কাটার জন্য স্ট্যাম্পে সই নিয়েছে ইব্রাহীম শেখ।”
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, অভিযোগটি তারা পেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।