“তাদের দিয়ে ইউপির ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় বলে মনে করে সরকার। “
Published : 08 Jul 2024, 12:00 PM
ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মো. আসাদুজ্জামান তপন এবং সদস্য অজিত কুমার বিশ্বাসকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
রোববার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউপি শাখা-১ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।
জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) অজিত কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামে গত ১৮ এপ্রিল দুজন নির্মাণ শ্রমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করায় তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
“ওই অভিযোগে তাদের দিয়ে ইউপির ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় বলে মনে করে সরকার। এ অবস্থায় তারা স্থানীয় সরকার আইনে অপরাধ সংঘটিত করায় একই আইনে তাদের স্বীয় পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।”
একই আইনে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) আসন শূন্য ঘোষণা সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
এই প্রসঙ্গে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, “মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা এসেছে, বিধি অনুযায়ী আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেটি বাস্তবায়ন করব।”
গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের একটি কালী মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থানরত নির্মাণ শ্রমিকদের ওপর হামলা হয়। সেদিন স্কুলের টয়লেট নির্মাণের কাজ চলছিল। সেজন্য শ্রমিকরা সেখানে ছিলেন।
সেখানে পিটুনিতে দুই শ্রমিকের প্রাণ যায়। তারা হলেন-উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপেরঘাট গ্রামের ২১ বছর বয়সী আশরাফুল ও তার ভাই ১৫ বছর বয়সী আশাদুল। শ্রমিকদের আটকে রেখে মারধরের তিনটি ভিডিও পরে ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ভিডিওতে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে শ্রমিকদের মারধরে অংশ নিতে দেখা যায়। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পরপরই ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য আত্মগোপন করেন। তাদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মধুখালী থানার ওসি মিরাজ হোসেন বলেন, মধুখালীর পঞ্চপল্লীর ঘটনায় হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা ও মন্দিরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩২ জনকে। তার মধ্যে আটজনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এরইমধ্যে পুলিশের ওপর হামলা মামলায় চারজন ও হত্যা মামলায় সাতজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে ধরতে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু এখনও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।