আটকদের সর্বনিম্ন ১৫ দিন এবং সর্বোচ্চ ২ মাস মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম।
Published : 22 Apr 2025, 04:35 PM
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগিদের হয়রানি ও জিম্মি করে প্রতারণার অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করেছে র্যাব।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত র্যাব-১৪ এ অভিযান চালায়।
পরে আটকদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম।
আটকরা হলেন- মন্টু মিয়া (২৫), মো. মাসুদ (৪৫), আলাল উদ্দিন (৬০), মো. আশরাফুল (২৭), মো. বিজয় (৫০), মো. আকাশ (২৪), ছোবহান মিয়া (৬৫), সুমন মিয়া (৩০), শাহদাৎ হোসেন বাবু (৩০), মো. শাকিব (২৪), আনিছ হোসেন রকি (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (২৯), মমিনুল ইসলাম রবিন (৩০) এবং রোকসানা আক্তার (৩৫)।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, মহিলা ওয়ার্ড, পরীক্ষাগার, বহির্বিভাগসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা ১৪টি মোবাইল জব্দ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম বলেন, “বৃহত্তর ময়মনসিংহের মানুষ এ হাসপাতালে সেবা নিতে আসে। সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দালাল চক্রটি নানাভাবে রোগি এবং স্বজনদের হয়রানি করে আসছিল।
“এই দালাল-প্রতারক চক্রকে ধরতে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিত আবেদন জানানোর পর অভিযান চালিয়ে চক্রের ১৪ জনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে।”
এরপর বিধি অনুযায়ী আটকদের সর্বনিম্ন ১৫ দিন এবং সর্বোচ্চ ২ মাস মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
র্যাব-১৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শামসুজ্জামান বলেন, “দালাল চক্রটি হাসপাতালটিকে চারদিকে ব্লক করে রেখেছিল। গ্রামাঞ্চল থেকে রোগী আসলে তাদের টার্গেট করে হয়রানির মধ্যে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিত।
“বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে রোগি ও তাদের স্বজনদের বেকায়দায় ফেলত। মূলত এই চক্রটিকে আইনের আওতায় এনে স্বস্তির লক্ষ্যে আমাদের এই অভিযান কার্যক্রম।”
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা নান্দাইলের রফিকুল ইসলাম বলেন, “সপ্তাহখানেক আগে বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির জন্য আসি। পরে একজন দালালের খপ্পরে পড়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হই। এতে আমার ১৫ হাজার টাকা খোয়া যায়।
“যা কোনো কাজে আসেনি। পরে বাবাকে পুনরায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আজকে যে অভিযানটি হল- সেটি স্বস্তির খবর। এমন অভিযান প্রতি সপ্তাহে দরকার।”
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, “ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক হাজার শয্যার বিপরীতে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার রোগী ভর্তি থাকে। যাদের বেশিরভাগ সেবা নিতে এসে বিভিন্ন সময় দালালদের খপ্পরে পড়ে।
“এই অভিযানের ফলে দালালদের দৌরাত্ম কিছুটা হলেও কমবে। কারণ আমাদের পক্ষে বাহিরে কী হচ্ছে না হচ্ছে সবসময় লক্ষ্য রাখা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন, “সেবা নিতে আসা মানুষজনকেও আরও সচেতন হতে হবে। কারণ সরকারি হাসপাতালের বিকল্প বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতাল হতে পারে না।“