তীব্র দাবদাহে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে বিপাকে পাটচাষি। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।
এ বছর রাজবাড়ী জেলায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। বৃষ্টি না হলে ফসলহানির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
বছরের এই সময়ে বৃষ্টিপাত পাটের মাঠকে সবুজ করে তোলে। কিন্তু এবার পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠ। স্যালো মেশিন দিয়ে সেচের চেষ্টা সফল হচ্ছে না। ৮ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে পানি তোলার চেষ্টা সফল হচ্ছে না অনেক জায়গায়।
পাংশা উপজেলার সরিষা, মৌরাট, পাট্টা, কসবামাজাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পেঁয়াজ ঘরে তোলার পর পাটের আবাদ করেছে চাষিরা।
সরিষা ইউনিয়নের কৃষক কার্তিক বিশ্বাস বলেন, “পানির অভাবে জমি বাঙ্গী ফাটা হয়ে গেছে। স্যালো মেশিন দিয়ে পানি উঠছেই না।”
কৃষক সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, “পেঁয়াজ তোলার পর চার বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। দুইবার সেচ দিয়েও গাছ ভালো রাখতে পারছি না। পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার এভাবে পানি দেওয়ার কারণে খরচও বেড়ে যাচ্ছে।”
আরেক কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, “সময়মতো পানি দিতে না পারলে পাট গাছ মরে যাবে। লোডশেডিংয়ের কারণে বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে সেচ দিতে পারছি না। ডিজেল মেশিনে খরচ বেশি পড়ে।”
মৌরাট ইউনিয়নের কৃষক হযরত আলী বলেন, “সেচের জন্য বিঘাপ্রতি চার হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। আবার পানি দিয়ে পরের দিন সকালে দেখি জমির আগের যে অবস্থা তাই হয়ে রয়েছে।”
কৃষক মধু শেখ বলেন, “আট ফুট গর্ত করেও পানি তুলতে পারছি না। বৃষ্টি না হলে কৃষকদের পাট গাছ মরে যাবে।”
পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে পাটচাষিরা বিপাকে রয়েছেন। আমরা কৃষকদের নদী বা পুকুর থেকে সেচ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। আপাতত এই পদ্ধতি ছাড়া আমাদেরও করণীয় কিছু নেই।”
পূর্বাভাস অনুযায়ী ২৩ এপ্রিলের বৃষ্টি হলে চাষিদের সমস্যার সমাধান হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।